সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ আগস্ট, ২০১৮ ১৭:০১

‘বল প্রয়োগ করতে এলে কি চুমু খাবে’

ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আপনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ অফিসের দিকে গোলাগুলি করতে করতে আসবেন, তাদের কে কি বল প্রয়োগ করবে না? চুমু খাবে?

রোববার (৫ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে বনানীতে তাঁর কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানান ওবায়দুল কাদের। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ষড়যন্ত্রের কোনো আভাস দেখা যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ষড়যন্ত্র তো চলছেই। আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া। আওয়ামী লীগ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে—এই ইতিহাস নেই। এই আগস্ট মাসেও ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অশুভ শক্তির আস্ফালনের গন্ধ, পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে অরাজনৈতিক আন্দোলন, সেই আন্দোলন কারা নোংরা রাজনীতির দিকে ‍নিয়ে যেতে চায়, সেটা গত তিন দিনে পরিষ্কার হয়ে গেছে। গতকাল তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এবং তাদের উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির দোসররা কীভাবে এই নিরীহ কোমলমতি আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে আন্দোলনকে নোংরা রাজনীতির খেলায় পরিণত করতে তৎপরতা চালিয়েছে, তা দেশবাসী লক্ষ করেছে।

বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ফোনালাপের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুমিল্লা থেকে ঢাকায় লোক পাঠানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন। ফোনালাপে পরিষ্কার হয়ে গেছে। সে আহ্বান কি অশুভ শক্তির চক্রান্তের প্রমাণ করে না?

ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, এই আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের পেছনে বয়স্ক অনেককে দেখা গেছে, যাদের বয়স ৩৫ ও ৪০ বছর। তারা স্কুল, কলেজের ড্রেস বানিয়ে নেমেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিরা ছাত্রছাত্রীদের পোশাক পরে ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে ধোঁকাবাজির নোংরা রাজনীতি তারা করেছে। বিধ্বংসী রাজনীতির সূচনা করেছে বিএনপি।

বিএনপির বিষয়ে অভিযোগ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটি মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মুখ ঢেকে আহাজারি করছে। আমি আওয়ামী লীগ অফিসে ধর্ষিত হচ্ছি, আওয়ামী লীগ অফিসে আমাকে রেপ করা হচ্ছে, আমাকে বাঁচান। আমাকে রক্ষা করুন—এসব কথা বলেছে।’

তিনি আরও বলেন, এই নোংরা রাজনীতিও বিএনপি করতে পারে। তাদের দোসররা করতে পারে। এটা কাল স্পষ্ট হয়ে গেছে।

মুখ ঢাকা মেয়েটি আটক হয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গভীর রাতে সেই মেয়েটি উত্তরায় ধরা পড়েছে। অনেক ঘটনাই ফাঁস হয়ে যাবে। সবার ছবি আছে। সবার কার্যক্রম আমরা নীরবে লক্ষ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোনো প্রকার বলপ্রয়োগে যায়নি এবং এই বলপ্রয়োগ আমরা করিনি।’

নিজেদের কর্মী আহত হওয়ার কথা জানিয়ে কাদের বলেন, ‘অশুভ শক্তি ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে আমাদের ১৭ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। তারা হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে।’

তিনি আহ্বান জানান, ‘আমি ছাত্রছাত্রীদের আবারও অনুরোধ করব, তোমাদের দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। সব দাবি মেনে নেওয়ার পর দেশে বিশৃঙ্খলা, অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য নোংরা রাজনীতির পাঁয়তারা কারা করছে?’

জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অশুভ শক্তি যত দিন এই দেশে রাজনীতিতে থাকবে, এরা অশান্তি করবে। এই অশান্তির যারা হোতা, এই দেশে কোনো দিনই শান্তি আসবে না, যত দিন বিএনপি এবং তাদের দোসররা রাজনীতিতে থাকবে।

নিজেদের ধৈর্যের কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘এই অশান্তির রাজনৈতিক শক্তিকে যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে হবে। সাত দিন ধরে ধৈর্য ধরেছি। আজকে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, এমপি-মন্ত্রী আমাদের নেতাদের হয়রানি, নাজেহাল করা হয়েছে। তারপরও আমরা হাসিমুখে সহনশীলতার সঙ্গে ধৈর্যের সঙ্গে মেনে নিয়েছি।’

শেখ কামালের প্রতিভার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। যিনি ছিলেন ক্রিকেটের একজন সংগঠক। আধুনিক ফুটবলের বাংলাদেশের জনক বলা যায়। যিনি ছিলেন একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা। ৬৯-এ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এই বীর তখনকার তরুণ শেখ কামালের নেতৃত্বে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের হতো। তিনি সংগ্রামী ছাত্রনেতা অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে অনেক কিছুই দিয়ে যেতে পারতেন শেখ কামাল। আজকে তাঁর জন্মদিনে আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত