সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:৫৫

৮০ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া ৮০ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দিনে ১৬০ জনের আপিল শুনানি করে তাদের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) আপিল শুনানির প্রথম দিন ৭৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশন।

বাকি চারটি আবেদনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। শনিবারের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করা হবে।

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া ৮০ জনের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন বিএনপির প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে বিএনপির ৫৫৫ জনের প্রার্থিতা বৈধতা পেয়েছিল। তাদের সঙ্গে আপিলজয়ী ৩৫ জন যোগ হওয়ায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিএনপির বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫৯০ জনে।

নির্বাচন ভবনের একাদশ তলায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই শুনানি চলে। ৫৪৩টি আপিল আবেদনের মধ্যে প্রথম দিন ১৬০টি আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

এই শুনানিতে বিচারকের আসনে ছিলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার আবেদনের ক্রমিক নম্বর অনুসারে ১৬১ থেকে ৩১০ এবং শনিবার ৩১১ থেকে ৫৪৩ পর্যন্ত আপিলের শুনানি হবে।

সদ্য আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে নাম লেখানো গোলাম মাওলা রনির মনোনয়নপত্র ২ ডিসেম্বর ‘হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকার’ কারণ দেখিয়ে বাতিল করে দেন পটুয়াখালীর রিটার্নিং কর্মকর্তা।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকেটে সাংসদ নির্বাচিত হওয়া রনির বলেছিলেন, হলফনামায় সই না করাটা ছিল তার ‘সাধারণ ভুল’।  এমন ভুলের কারণে অতীতে কখনও কোনো মনোনয়ন বাতিল হয়নি।

বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন এবং ঢাকা-১ আসনে বিএনপির মনোনীত খন্দকার আবু আশফাকও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের কারণে এ দুটি আসনি বিএনপির প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছিল।  

বৃহস্পতিবারের শুনানি শেষে বিএনপির পার্থীদের অন্যতম আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের জানান, আমাদের বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়ন ফিরিয়ে দিয়েছে কমিশন। এখন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন ফিরিয়ে দেওয়ার ওপর আমাদের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি নির্ভর করছে।”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার নামে এবার ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল।  কিন্তু দুর্নীতি মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা হওয়ার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তারা তা বাতিল করেন।
 
প্রার্থিতা ফিরে পেলেন যারা:-
পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি। হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল, বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন। ওই আসনে তিনি খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ার কারণ দেখিয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল, ঢাকা-১ আসনে বিএনপির খন্দকার আবু আশফাক। চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, ঢাকা-২০ আসনে বিএনপির তমিজ উদ্দিন। চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবির তালুকদার। চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী আখতারুজ্জামান। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল খেলাপী ঋণের জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপী হওয়ায়, ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির আব্দুল মজিদ। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল, পটুয়াখালী-১: ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. সুমন সন্যামত। আয়কর রিটার্নের কপি না দেওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল, পটুয়াখালী-৩: বিএনপির মোহাম্মদ শাহজাহান। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল ঋণখেলাপের অভিযোগে, মাদারীপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মিন্টু। অসম্পূর্ণ ফরম জমা দেওয়ায় এবং স্বাক্ষর ঠিকমত না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল।

সিলেট-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। মূল হলফনামায় স্বাক্ষর ছিল না, জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. হাসাদুল ইসলাম। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, মানিকগঞ্জ-২ আসনে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদতাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আয়নুল হক। মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল বিল খেলাপি হওয়ায়, গাজীপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়নাল আবেদীন। হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপনের কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জেসমীন নূর বেবী। হলফনামা নোটারি না করায় এবং ২০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প অথবা সমপরিমাণ কোর্ট ফি না দেওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল হেলাল। মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল পৌর কর পরিশোধ না করার কারণে, রংপুর-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা সেলিম। আরপিওর ব্যত্যয় ঘটানোর কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল।

হবিগঞ্জ-১ আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী জোবায়ের আহমেদ। মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল হলফনামায় সই না থাকায়, ময়মনসিংহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবু বকর সিদ্দিক। মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল ঋণ খেলাপির অভিযোগে, ময়মনসিংহ-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী জয়নাল আবেদিন। বাতিলের কারণ জানা যায়নি, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল খালেক। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল ঋণ খেলাপির অভিযোগে, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে গণফোরামের মো. মাহফুজুর রহমান। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল ঋণ খেলাপির অভিযোগে, আসনে কুড়িগ্রাম-৪: স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ আলী। মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন না থাকায়, পঞ্চগড়-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফরহাদ হোসেন আজাদ। হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত