সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১২:৫৭

কলচার্জ, কলড্রপ ও বিরক্তিকর মেসেজের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

গ্রাহকদের মতামত না নিয়ে মোবাইল কলচার্জ বৃদ্ধি, কলড্রপে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া ও বিরক্তিকর এসএমএস পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে হাই কোর্টে।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেওয়া এই রিট আবেদনে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি করে মোবাইল গ্রাহকদের অধিকার তত্ত্বাবধান, পর্যবেক্ষণ এবং সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের অধিকার সুরক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে। কলড্রপে গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে পৃথক কমিটি গঠনের আর্জিও জানানো হয়েছে রিটে।

পাশাপাশি পুনরায় কলরেট ও অন্যান্য চার্জ বাড়ানো এবং মোবাইল গ্রাহকদের অনাবশ্যক ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাই কোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় রিট আবেদনটি শুনানির জন্য ৫১ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড, এয়ারটেল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাংলা লিংক লিমিটেড ও টেলিটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোটার্স ফোরামের সদস্য এম. বদিউজ্জামান, মেহেদী হাসান ডালিম, মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করেছেন।

তাদের আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের জানান, এমনিতেই পাশের দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে মোবাইল কলচার্জ বেশি। এরপর গ্রাহকের মতামত না নিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে অতিরিক্ত কলরেট চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা গ্রাহকদের অধিকারের পরিপন্থী ও বেআইনি।

রিট আবেদনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ মাসে ২২২ কোটি বার কলড্রপ করেছে মোবাইল অপারেটরগুলো।

এর মধ্যে গ্রাহক সংখ্যায় শীর্ষে থাকা গ্রামীণফোন কলড্রপের ক্ষেত্রেও শীর্ষে অবস্থান করছে। ১৩ মাসে এ অপারেটরের কল ড্রপ হয়েছে ১০৩ কোটি ৪৩ লাখ বার। গ্রাহক সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রবির কলড্রপ হয়েছে ৭৬ কোটি ১৮ লাখ বার।

ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণফোন ও রবির পর সবচেয়ে বেশি কলড্রপ হয়েছে বাংলালিংকের। এর সংখ্যা ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ আর টেলিটকের আনুমানিক ৬ কোটি বার।

২০১৪ সালে কয়েকটি অপারেটর কলড্রপের বিপরীতে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করে। এ নিয়ে তারা প্রচারও চালায়। কিন্তু কিছুদিন পর কোনো ঘোষণা ছাড়াই ক্ষতিপূরণ বন্ধ করে দেয় অপারেটরগুলো।

এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এমনকি সরকারের একাধিক মন্ত্রীও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে অপারেটরগুলোর কাছ থেকে কলড্রপের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

আইনজীবী ইসরাত বলেন, গত বছরের জানুয়ারি থেকে কলড্রপের জন্য গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা অপারেটরগুলোর। কিন্তু অপারেটরদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে গত ১০ ডিসেম্বর উকিল নোটিস পাঠিয়ে সাড়া না পেয়ে এই রিট আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ইসরাত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত