সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৪:০৫

চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর মারা গেছেন

চলে গেলেন চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগ চালু হয়েছিল তার হাত দিয়েই।

শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে নিজের বাসায় এই শিল্পীর মৃত্যুবরণ করেন।

শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের সাবেক পরিচালক মনিরুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করেন।

একুশে পদকজয়ী এই শিল্পীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তার উদ্যোগে জেলা উপজেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন জনপ্রিয় হয়েছিলো।

১৯৩৫ সালে সাতক্ষীরা জেলায় সৈয়দ জাহাঙ্গীরের জন্ম। চারুকলা থেকে পাস করে দীর্ঘদিন তিনি নিজেকে নিয়োজিত রাখেন একজন চিত্রকর হিসেবে। ১৯৫৮ সালে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর বিভিন্ন স্টেট ঘুরে ঘুরে আমেরিকান শিল্পধারার সঙ্গে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের পরিচয় হয়।

সৈয়দ জাহাঙ্গীর পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনে খবর পড়তেন। বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হল, তিনি আটকা পড়েন পাকিস্তানে। তাকে টেলিভিশন থেকে বাদ দেওয়া হয়।

১৯৭৩ সালে দালালের মাধ্যমে পালিয়ে দেশে ফেরেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর। ধীরে ধীরে বিমূর্ততা থেকে সরে এসে আঁকতে শুরু করেন রিয়েলিস্টিক ফর্মে। তার ছবিতে আসতে থাকে গ্রাম বাংলার রঙ।

১৯৭৭ সালে শিল্পকলা একাডেমিতে চাকরি নেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর। ১৬ বছর শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বে থেকে তিনি বাংলাদেশের চিত্রকলাকে এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগ নেন। তার সময়েই শিল্পকলা একাডেমির দ্বিবার্ষিক আন্তর্জাতিক চিত্রকলা প্রদর্শনীর শুরু হয়।

তার সৃষ্টিকর্মের বেশিরভাগই গ্রাম এবং গ্রামের প্রকৃতি নিয়ে। আত্মার উজ্জীবন,’ ‘উল্লাস,’ ‘ধ্বনি,’ ‘অজানা অন্বেষা-সহ অসংখ্য চিত্রকর্ম রয়েছে তার। ‘অশনি সংকেত’ নামের একটি সিরিজে তিনি ১৯৭৪-৭৫ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ধরতে চেয়েছেন।

সরকার সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে ১৯৮৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে। ১৯৯২ সালে তিনি পান চারুশিল্পী সংসদের বিশেষ সম্মাননা। এছাড়া মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, শশীভূষণ সম্মাননা, বার্জার পেইন্টস, হামিদুর রহমান পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী।

মনিরুজ্জামান জানান, শনিবার বিকাল ৩টায় সৈয়দ জাহাঙ্গীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। সেখানে চারুশিল্পী-শিক্ষক ও সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।

বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত