সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৫

সুবর্ণচরে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক পায়নি মানবাধিকার কমিশন

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের শিকার নারীকে গুরুতর আঘাত করা এবং তাকে ধর্ষণ করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে এই মারধর ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার কোনো সম্পর্ক তদন্তকালে তদন্ত কমিটি খুঁজে পায়নি। ওই ধর্ষণের ঘটনা ‘পূর্ব শত্রুতার জেরে’ বলে কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটের রাতে রাতে (রোববার, ৩০ ডিসেম্বর) মধ্যম বাগ্যা গ্রামের সোহেল, হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেচু, বাসু, আবুল, মোশারেফ ও ছালাউদ্দিন ৪০ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর বসতঘর ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা ওই নারীর স্বামী ও চার সন্তানকে বেঁধে রেখে তাকে ঘরের বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ শেষে পিটিয়ে আহত করে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ৯ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘর ভাঙচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদিকে পিটিয়ে আহত করে। সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণেই এ ঘটনা ঘটে বলে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল।

মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্যের কমিটিতে প্রধান ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর। এছাড়া কমিশনের উপ-পরিচালক সুস্মিতা পাইক ও গাজী সালাহউদ্দিনও এই কমিটিতে ছিলেন।

এই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মামলার এজাহারে ওই নারীর ধানের শীষের নেতা-কর্মী-সমর্থক হওয়া, তার ধানের শীষে ভোট দেওয়া, আসামিরা নৌকা প্রতীকের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও পোলিং এজেন্ট হওয়া, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে মারধর বা ধর্ষণের শিকার হওয়ার কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। বরং এজাহারে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মারধর ও ধর্ষণ করে। এছাড়া ওই নারী তদন্ত কমিটির সামনে দেওয়া জবানবন্দির কোথাও বলেননি যে, তিনি ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন। তার স্বামীও এসব কথা বলেননি।’

প্রতিবেদনের উপসংহার হিসেবে বলা হয়েছে, ‘একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেওয়া বা ভোট দেওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বা আসামিরা আওয়ামী লীগের কর্মী হওয়া বা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মীর মাধ্যমে ওই নারীকে মারপিট ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় না।’

ওই প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করারও সুপারিশ করা হয় ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত