রিপন দে, মৌলভীবাজার

১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ১২:৩২

সিলেট বিভাগে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চ মাত্রার এসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিজ্ঞানীরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন এবং তা মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য মতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয় যার বাজারদর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারা বাংলাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর পরিমাণে। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার ওপরে কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না। সিলেট বিভাগের মাটি এসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না সেটাই ছিল প্রচলিত ধারণা।

কিন্তু এই ধারনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এক দল গবেষক। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চ মাত্রার এসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদী ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এই পরিত্যক্ত ও অনাবাদী জমিকে আবাদের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে ফুল চাষে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এই অঞ্চলের অনেক জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে, যার ফলে ফুল চাষ করে এই অনাবাদী জমিগুলো থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব। এই অঞ্চলে ফুল চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়েছ কর্মকর্তারা।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, ফুল চাষে আগ্রহী ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে  অনেক কিছু শিখেছেন। কি পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয় তা জেনেছেন এবং ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফুল চাষের জন্য উত্তমভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসল ধান, ফল, সবজির মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়, প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ্য যে কোন মাপের হতে পারে, তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মি. হলে ভালো হয়। করম (বীজ) লাগানো হলে তিন মাস পর থেকে স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়, যা চলবে পরবর্তী ২৫ দিন।

তিনি আরও বলেন, গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের ওপর পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত