নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ, ২০১৯ ১৬:০১

১১৬ উপজেলায় ভোট গ্রহণ শেষ, অপেক্ষা ফলাফলের

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেট বিভাগের সিলেট ও মৌলভীবাজারের ১৯ উপজেলাসহ সারাদেশের ১১৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এবার অপেক্ষা কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ভোট গণনা।

সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে।

দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলার মধ্যে সিলেট বিভাগের সিলেট জেলা ও মৌলভীবাজার জেলার ১৯টি জেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট জেলার উপজেলাগুলো হচ্ছে- সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার। মৌলভীবাজার জেলার উপজেলাগুলো হচ্ছে- মৌলভীবাজার সদর, বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেট ও মৌলভীবাজারের ১৯ টি উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ ৯১ হাজার ২২১ ভোটার। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১২ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭১০ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৮ হাজার ৯০ জন, মহিলা ভোটার ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৮১৫টি।

মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় মোট ভোটার ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৫১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৫২ হাজার ২৬৪ জন ও ৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৪৭ জন হলেন মহিলা ভোটার। ৫ পৌরসভা আর ৬৭ ইউনিয়নের এ জেলায় ভোট কেন্দ্র ৫১৯টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৯৩ টি। এর মধ্যে স্থায়ী ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৭৬ টি ও অস্থায়ী ভোট কক্ষ ৩১৭টি।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপের ২৩টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এর মধ্যে ছয়টি উপজেলায় কোনো পদেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ভোট নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।

যে ছয়টি উপজেলায় ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না, সেসব উপজেলা হচ্ছে নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের রাউজান ও মিরসরাই। এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।

এর বাইরে আরও ১৭টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে না। উপজেলাগুলো হচ্ছে রংপুরের কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া; দিনাজপুরের হাকিমপুর, পার্বতীপুর, ঘোড়াঘাট; বগুড়ার আদমদীঘি, শেরপুর; পাবনার সুজানগর; মৌলভীবাজারের সদর; চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া; রাঙামাটির সদর, কাপ্তাই, লংগদু এবং খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি।

এ ছাড়া ১৩টি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ১২টি উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এসব পদেও ভোট হচ্ছে না। সব মিলিয়ে ৪৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।

দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী ৩৭৭ জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৪৮ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৬ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৯টি।

নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে এসব উপজেলায় আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়।

তিন পার্বত্য জেলার যেসব উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে, সেগুলোতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে অতীতে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেলেও এবারের উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে নিরুত্তাপ পরিবেশে।

এক সপ্তাহ আগে ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুব কম। ইসির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ভোট পড়ার হার ছিল ৪৩ দশমিক ৩২ শতাংশ।

দ্বিতীয় ধাপে ১২৯টি উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। পরে ঘোষিত তফসিল থেকে গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার নির্বাচন তৃতীয় ধাপে ও দিনাজপুর সদর উপজেলার নির্বাচন চতুর্থ ধাপে করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ ছাড়া আদালতের রায়ে ইসি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে।

রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম হলে ইসি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, উপজেলা নির্বাচনে পক্ষপাত ও অনিয়মের অভিযোগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করেছে ইসি। এ ছাড়া দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বগুড়ার শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা ও বান্দরবানের আলীকদমের ওসিকে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত