সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ মে, ২০১৯ ১৩:৫০

দুপুরে রান্না করা খাবার পাবে ১০৪ উপজেলায় প্রাথমিকের শিশুরা

জাতীয় স্কুল মিল’ নীতি অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে দুপুরে রান্না করা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফও) সহযোগিতায় জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা, বান্দরবানের লামা উপজেলা, বরগুনার বামনা উপজেলায় ২০১৩ সালে এই প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়। এখন দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার সব সরকারি প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রকল্পটি চালু করতে চায় ডব্লিউএফও।

আগামী জুলাই থেকে আরও ১৬টি উপজেলায় চালু হবে দুপুরে খাবার দেওয়ার এই কর্মসূচি। পরে এই কর্মসূচির আওতায় আসবে ১০৪টি উপজেলার সবগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘১৬টি উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখে বাকি উপজেলাগুলোতে কীভাবে কাজ করা হবে, তার ছক কষা হবে। আশা করছি আগামী বছরের মধ্যে ওই সব প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারবো।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটির বেশি। এর মধ্যে দারিদ্র্যপ্রবণ ১০৪টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২ লাখের মতো। ১০৪ উপজেলায় স্কুল মিল নীতি বাস্তবায়ন করতে গেলে বছরে ৮ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে হিসাব কষেছে মন্ত্রণালয়।

সচিব আকরাম আরো বলেন, ‘আমরা ৮০০০ কোটি টাকা চেয়েছি। সারা দেশে বাস্তবায়ন করতে গেলে এই টাকাটা লাগবে। তবে সরকারি সহযোগিতা ছাড়াও বেসরকারি পর্যায় থেকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে তাও আমরা নেব।’

জাতীয় স্কুল মিল নীতির দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বাজেট থেকে প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থ বিভাগও এই প্রকল্পে অর্থ দেবে।

স্কুল মিল নীতি প্রকল্পের ওপিডি নূরুন্নবী সোহাগ বলেন, ‘স্কুলে দুপুরের খাবার দিতে গিয়ে  শিক্ষার্থী প্রতি ১৬ টাকা খরচ হবে।’

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে একটি সেল বা ইউনিট গঠন করা হবে। কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণে একটি পৃথক জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ গঠনের চিন্তাও রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কারিগরি সহায়তায় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পরে একটি খাদ্য ও পুষ্টি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রও গঠন করবে মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) যৌথভাবে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু করে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ১০৪টিউপজেলায় ৩২ লাখ ৩১ হাজার প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে প্রস্তুত বিস্কুট সরবরাহ করা শুরু হয়। কিন্তু শুধু বিস্কুট দিয়ে শিশুদের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পুষ্টিবিদরাও স্কুলে ভারী খাবার দেওয়ার পক্ষে মতামত দেন। এরপর রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয় বান্দরবানের লামা, বরগুনার বামনা ও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার স্কুলগুলোতে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত