সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ মে, ২০১৯ ১৫:০০

রাজধানীর ৩৪ পয়েন্টে ওয়াসার পানি পরীক্ষার নির্দেশ

পানির চারটি স্তরসহ ৩৪টি পয়েন্টে রাজধানীর ওয়াসার পানি পরীক্ষা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমানের মতামত শুনে এ আদেশ দেওয়া হয়। আগামী ২ জুলাই পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে আদালত বলেছেন, পানি পরীক্ষার ব্যয় বহন করবে ওয়াসা। যা সমন্বয় করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার জন্য পানির নমুনা সংগ্রহে ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী তানভীর আহমেদ।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জানায়, ঢাকা ওয়াসার ১০টি জোনের ৫৯ এলাকার পানিতে ময়লা পানির প্রবণতা বেশি। সরকারি এই সংস্থা গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পেয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা বাসাবাড়ির ট্যাপের পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল-সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পাস) জহিরুল ইসলাম বরাবর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান ১৩ মে প্রতিবেদনটি পাঠান।


আজ আদালতে লিখিত মতামত তুলে ধরেন অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ করা পানির প্রকৃত চিত্র পাওয়া সময় সাপেক্ষ, জটিল ও ব্যয়বহুল। সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন পরিষ্কার পানি পরীক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি, যা পান করে কোনো এলাকায় রোগ ছড়াবার তথ্য মেলে। মনে রাখতে হবে, অভিযোগ আছে এমন এলাকার পানি আমাদের সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে। নিরাপদ স্বাস্থ্যকর পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতেই হবে। এ জন্য মানসম্মত সরবরাহ লাইন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ চাই। মনে রাখতে হবে, সরবরাহ লাইনের চাহিদা ও পর্যাপ্ততা নিরিখে বিভিন্ন উৎস থেকে পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। যেমন, ভূমির পানি, ভূগর্ভস্থ পানি, শীতলক্ষ্যা বা বুড়িগঙ্গার পানি বছরের সকল সময়ে একই উৎসের পানি সমানভাবে জোগান দেওয়া হয় না। যা লাইনের পানিতে ব্যাকটেরিয়া লোডের তারতম্য ঘটাতে পারে।’

ওয়াসার প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে যেসব এলাকায় ময়লা পানি পাওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায় সেসব এলাকা হচ্ছে: যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, মুগদা, রাজারবাগ, কুসুমবাগ, জুরাইন, মানিকনগর, মান্ডা, দোলাইরপাড় ও মাতুয়াইল, ভাগলপুর, লালবাগ, বকশীবাজার, শহীদনগর, জিগাতলা, ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, কলাবাগান, ভূতের গলি, মোহাম্মদপুর, শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ, মণিপুর, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর, মহাখালী, তেজগাঁও, সিদ্ধেশ্বরী, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মগবাজার, নয়াটোলা, রামপুরা, মালিবাগ, পরিবাগ, কদমতলী, দনিয়া, শ্যামপুর, রসুলবাগ, মেরাজনগর, পাটেরবাগ, শনিরআখড়া, কোনাপাড়া, মুসলিম নগর, বাড্ডা, আফতাবনগর, বসুন্ধরা, ভাটারা, উত্তরা, খিলক্ষেত, ফায়েদাবাদ, মোল্লারটেক, রানাভোলা, কাফরুল, কচুক্ষেত, পল্লবী।

অভিযোগ পাওয়ার পর পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করে ময়লা পানির অভিযোগ নিরসন করা হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত