সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ জুন, ২০১৯ ২৩:১৬

ঈদযাত্রায় সড়কে নিহত ১৪২, আহত ৩২৪

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৪২ জন নিহত ও ৩২৪ জন আহত হয়েছেন বলে এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে জানিয়েছে সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

সোমবার (১০ জুন) সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত ১১ দিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে সংঘটিত ৯৫টি দুর্ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদের আগে ৩ জুন শেষ কর্মদিবস থাকলেও এর আগে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক এবং রোববার শবে কদরের ছুটি ছিল। এ কারণে ঈদ-পূর্ব সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ৩০ মে থেকেই কার্যত ঈদযাত্রা শুরু হয়। ওইদিন সাতটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হয় ও আটজন আহত হয়। ৩১ মে ৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হন যথাক্রমে ছয়জন ও সাতজন। ১ জুন ১১টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ১০ ও ৩১। ২ জুন ১৫টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হন। ৩ জুন সাতটি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। ৪ জুন দুর্ঘটনা ঘটেছে ছয়টি। এতে নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ১৬ জন ও ৬২ জন। ৫ জুন ঈদুল ফিতরের দিন ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। ৬ জুন নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ১১ ও ৩৩। ওইদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে আটটি। ৭ জুন ছয়টি দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে ১১ জনের, আহত হয়েছেন ১৮ জন। ৮ জুন সাতটি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। ৯ জুন ৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে পাঁচ ও ২৪।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় এবার সড়ক ও নৌপথে ঈদ-যাতায়াত স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জনগণ প্রত্যাশিত সেবা পায়নি।

এতে বলা হয়, দূরপাল্লার সড়ক-মহাসড়কে বড় ধরনের যানজট ছিল না। নৌ ও রেলপথ ছিল দুর্ঘটনামুক্ত। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপনা ভালো থাকায় পদ্মার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল নিরবচ্ছিন্ন ছিল। ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগও ছিল স্বাভাবিক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদ-সার্ভিসে পর্যাপ্তসংখ্যক লঞ্চ থাকায় ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে উপকূলীয় জেলাগুলোর সঙ্গে নৌ যোগাযোগ স্বাভাবিক ও যাত্রী ভোগান্তি কম ছিল। তবে এক শ্রেণির নৌশ্রমিক ও কর্মচারী ডেকের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে প্রযুক্তিগত সমস্যা ও ঈদ-যাত্রার প্রথম দিন থেকে দূরপাল্লার অনেক ট্রেনের সময়সূচী বিপর্যয়ের কারণে অগণিত যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। ঈদের আগে ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-পাটুরিয়া ও ঢাকা-ময়মনসিংহসহ দূরপাল্লার বিভিন্ন সড়কে মাত্রাতিরিক্ত বাসভাড়া আদায় বন্ধ করা যায়নি। ঈদ-ফেরত যাত্রীদের কাছ থেকেও একইভাবে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলেও তা বন্ধ করতে পারেনি প্রশাসন। এমনকি লঞ্চ ও ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহনও বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ঈদের ছুটিতে রাজধানীর মধ্যে চলাচলরত বাস ও অটোরিকশাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া আদায় করেছে। উবার ও পাঠাও’র মতো ইন্টারনেটভিত্তিক রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রী বহনকারী কোম্পানিগুলোও ঈদ-ছুটিতে তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়েছিল।

বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ, অনলাইন নিউজপোর্টাল, সংবাদ সংস্থা ও টেলিভিশন চ্যানেলের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত