সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ আগস্ট, ২০১৯ ০২:১৪

দেশে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়েছে সোয়া ২ ভাগ

পুরনো ছবি

সাম্প্রতিককালে দেশে প্রায় দুই শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বর্তমান সরকারের আমলে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ভালো বলেও দাবি তার।

শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার কবির বলেন, এরপরও একটি গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। যারা উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করতে চায় তারাই এসব সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়াচ্ছে।

এতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। তাই সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘এই প্রথম বাংলাদেশে ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা সোয়া দুই ভাগ বেড়েছে। এখন আমাদের প্রায় ১১ ভাগের মতো হিন্দু জনসংখ্যা। যেটা আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।’

তিনি বলেন, ইউনিফর্ম না পরে স্কুলে আসায় মিরপুরের আলীমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ২৪ জুলাই সতর্ক করা হলে তার পরিবারের সদস্যরা এসে প্রধান শিক্ষক রমেশ কান্তি ঘোষের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করেন এবং তার কক্ষে ভাঙচুর চালান।

“পরে ছাত্রীর ভাই রাকিবুল হাসান ফেসবুকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে লেখেন, প্রধান শিক্ষক বলেছেন ‘হিজাব-রোরকা পরে স্কুলে যাওয়া যাবে না’। এ নিয়ে উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ করে, যার তদন্ত চলছে।”

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেইসবুকে ‘সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টিকারী’ ওই বক্তব্য ফেসবুকে পোস্ট করেছেন বলে অভিযোগ করেন শাহরিয়ার কবির। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রমেশ কান্তি ঘোষ এবং তার পরিবারের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি মামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে ধর্মীয় বা জাতিগত কারণে সংখ্যালঘু হওয়ার জন্য কেউ লাঞ্ছনা বা নির্যাতনের শিকার হবেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আইন করাটা অতি জরুরি প্রয়োজন।”

নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহারের শিকার হওয়ার দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, “আমি সরকারকে বলবো, ফেসবুক একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়াচ্ছে, যে মাধ্যম আমাদেরকে ঘৃণা-দাঙ্গাতে প্ররোচনা দেয়, তাহলে সেই মাধ্যম না থাকলে কী অসুবিধা হবে, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। সে বিষয়ে আমাদের যে মন্ত্রী আছেন, তাকে জবাবদিহি করতে হবে।”

তিনি বলেন, প্রশাসনের একটি অংশ সরকারের পক্ষে নেই। আমি আবারও বলছি, সরকারের পক্ষে নেই। আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি, তারা সরকারের পক্ষে নেই। কিন্তু সরকার তাদের বিষয়ে কোনো রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই প্রশ্রয় দেওয়ার কারণেই কিন্তু এই সরকার অনেক বিপদে পড়বে।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলসহ অন্যদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত