সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ আগস্ট, ২০১৯ ২১:০৬

‘উলফ প্যাকের’ ৫ জনের টার্গেট ছিল পুলিশ

নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ এর পাঁচ জঙ্গি পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে তারা বলেছে, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোহাম্মদ শিবলী শাহাজাদ ওরফে সাদী, শাহ এম আসাদুল্লাহ মর্তুজা কবীর ওরফে আবাবীল, মাশরিক আহমেদ, মো. আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেক ও এসএম তাসনিম রিফাত। এর মধ্যে শিবলী শাহাজাদ ও মর্তুজা কবীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী। মাশরিক যশোর এম এম কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। তাসনিম রিফাত যশোরের উপশহর ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে পড়ছেন। আর আশরাফুল আল আমিন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন।

রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার এই পাঁচজনকে শুক্রবার আদালতে পাঠিয়ে দশদিনের রিমান্ড চায় সিটিটিসি। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিবাদে কেউ একাকী উদ্বুদ্ধ হলে তাকে ‘লোন উলফ’ বলে। আর এই সংখ্যাটি যখন এক থেকে পাঁচজন বা তারও অধিক হয় তখন তাকে উলফ প্যাক বা প্যাক অফ উলফ বলা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার এই পাঁচজনই বয়সে তরুণ। এর মধ্যে শিবলী শাহাজাদ ইস্তিহাদি (আত্মঘাতী) হামলার পরিকল্পনা করছিল। এ লক্ষ্যে সে আইইডি (হাতে তৈরি বোমা) তৈরির কিছু সরঞ্জাম সে জোগাড় করেছিল। সম্প্রতি (২৩ জুলাই) খামারবাড়ি ও পল্টন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া আইইডি’তে গ্যাসের এক ধরনের ক্যান ব্যবহৃত হয়েছিল। সে ধরনের চারটি কনটেইনার শিবলী শাহাজাদ সংগ্রহ করেছিল। ওই ঘটনার সঙ্গেও এই পাঁচজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা পর থেকে পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে অনেক জঙ্গিরা গ্রেপ্তার বা অভিযানে নিহত হয়েছে। সে জন্য তারা পুলিশকে টার্গেট করছে। হামলার জন্য এই গ্রুপটি সুনির্দিষ্ট যে জায়গাটি নির্ধারণ করে ছিলা তা কৌশলগত কারণে তারা প্রকাশ করছেন না। শিবলী শাহাজাদের হামলাটি পরিচালনা করার কথা ছিল। আর এ কাজে তাকে সহায়তা করার কথা ছিল মর্তুজা। মর্তুজা একদিকে আধ্যাত্মিক নেতা। আরেক দিকে সে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টেররিস্ট ফাইনান্স সংগ্রহের কাজে সে নিয়োজিত ছিল। এই হামলা পরিচালনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয় সেটা সে ডার্ক ওয়েবে সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। কিছু অর্থ সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণও তাদের কাছে রয়েছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, মাশরিক আহমেদের কার্যক্রম ছিল যশোর কেন্দ্রিক। সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে যেহেতু বিভিন্ন ক্রিমিনাল গ্রুপ অস্ত্র সংগ্রহ করে, সেদিক দিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে এই গ্রুপটাকে দেওয়ার চেষ্টা করছিল মাশরিক। আর আশরাফুল ও তাসনিম সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করে আসছিল। এই পাঁচজনের সঙ্গে আরও কয়েকজনের নাম জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত