সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ আগস্ট, ২০১৯ ১৫:৩০

সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছর

আজ ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছর। ২০০৫ সালের এই দিনে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলার প্রায় পাঁচশ স্থানে একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। এতে প্রাণ হারান দু’জন, বোমার সিপ্লন্টারের আঘাতে আহত হন শতাধিক মানুষ। তাদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলাকে তারা ‘সাউন্ড ব্লাস্ট’ নামে আখ্যায়িত করেছে। যেসব জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে, প্রতিটি জায়গায় তারা ‘ইসলামী আইন বাস্তবায়ন’ শিরোনামে লিফলেট ফেলে যায়।

সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমেই মূলত নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয় জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। এরপর তারা বিভিন্ন জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এসব ঘটনায় সারাদেশে মোট ৩২২টি মামলা দায়ের হয়েছে, চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ২৮৯টি মামলার। এর মধ্যে ১১৫ মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে, ২৫ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, আট মামলার তদন্ত কাজ চলছে। বিচার শেষ হওয়া ১১৫ মামলার মধ্যে ৯৫ মামলায় আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৫১ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৮৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।

জেএমবির বিভিন্ন জঙ্গি হামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন ফেলে ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক সোহেল আহমেদ চৌধুরী ও জগন্নাথ পাড়ে হত্যার ঘটনা। ওই সময় বোমা হামলাকারী জেএমবি সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন হাতেনাতে ধরা পড়ে। এ দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ সাত জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে আল মামুন ছাড়া বাকি ছয় জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।

২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে সারাদেশে নিজেদের নেটওয়ার্কের বিস্তৃতির তথ্য জানান দিলেও আরও আগে থেকেই জেএমবি জঙ্গি হামলা চালিয়ে আসছে। ২০০১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের রক্সি সিনেমা হল ও সার্কাস মাঠে বোমা হামলা চালায় তারা। এরপর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত হামলায় জড়িত ছিল জেএমবি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, ২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা চালিয়ে আতঙ্ক ছড়ায় জেএমবির নব্য ধারা (নব্য জেএমবি)।

এই দুই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মুখে সংগঠনটির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরীসহ অন্তত ৭০ জঙ্গি নিহত হয়। অনেক শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত