সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ আগস্ট, ২০১৯ ১২:০৭

রোহিঙ্গা সংকটের দুই বছর আজ

আজ ২৫শে আগস্ট। ঠিক দুই বছর আগে ২০১৭ সালের এই দিনে সেনা চৌকিতে হামলা করে সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। এ হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে শুরু করে। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। এর পর পার হল দুইটি বছর, এই দুই বছরে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অসহায় অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট হামলার পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু করে তাতে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, সেনা অভিযানে গণহত্যা, গণধর্ষণ হয়েছে এবং তা রোহিঙ্গা জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা থেকেই করা হয়েছে। সেনাবাহিনী প্রায় সব রোহিঙ্গা শরণার্থীর সব অভিযোগই অস্বীকার করে বলে আসছে, এটা ছিল সন্ত্রাসবিরোধী বৈধ ও আইনসম্মত অভিযান।

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার, ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার প্রত্যবাসন তৃতীয়বারের মতো ব্যর্থ হয়। কারণ, রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরতে নারাজ। প্রত্যাবাসন শুরু করতে দুই দফা দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। উপযুক্ত নিরাপত্তা নেই বলে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে অনীহা জানিয়েছে রোহিঙ্গারা। যদিও, মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মিন থেইন বলেন, ফিরে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় সব ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে, পুলিশ তাদের পাহারা দেবে। যদিও এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্রকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে, দিনটিকে ব্যাপক আকারে পালন করতে রোহিঙ্গারা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গত বছরও রোহিঙ্গারা ক্যাম্পগুলোতে তাদের পলায়নের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করেছিল। জাতিসংঘের কিছু সংস্থা ও দেশী বিদেশী এনজিওগুলোর সহযোগিতায় এবারের বর্ষপূর্তি উদযাপন ভিন্ন মাত্রা যোগ হবে বলে জানা গেছে। কারণ তারা সমম্বিতভাবে গত ২২ আগস্টের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা বানচাল করতে সক্ষম হয়েছে।

জানা গেছে, ৩২টি ক্যাম্পে গত ১৫ দিন ধরে রোহিঙ্গা নেতারা ডোর টু ডোর কাজ করেছে। তারা সব ক্যাম্পে ২৫ আগস্ট ব্যাপকভাবে পালনে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করতে উদ্বুদ্ধকরণ সভা সমাবেশ করেছে। রোহিঙ্গাদের দেশি বিদেশি কিছু সংগঠনের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা নেতা ও মাঝিরা দিবসটি পালনে অধিক তৎপরতা চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গার প্রত্যবাসন তৃতীয়বারের মতো ব্যর্থ হওয়ার জন্য মিয়ানমারের অসহযোগিতাকে দায়ী করছে বাংলাদেশ, তবে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। উখিয়া ও টেকনাফে স্থানীয় লোকের সংখ্যা পাঁচ লাখের কিছু বেশি হলেও সেখানে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত