সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ অক্টোবর, ২০১৯ ১৫:৩৫

‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিনে ‘মুসলিম তাওহিদী জনতা’র ব্যানারে এক সমাবেশের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে কয়েকশ মানুষ। এ ঘটনায় এক মাদ্রাসাছাত্রসহ অন্তত ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা সদরে বেলা পৌনে ১১টার পর থেকে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মো. শাহীন জানিয়েছেন, গুলিত নিহত দুইজনের মৃতদেহ তার হাসপাতালে রয়েছে। আরও দুইজনকে মৃত অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জেলার সিভিল সার্জন রথীন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন।

আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও কয়েকজনকে বরিশারের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বোরহানউদ্দিনের উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, অবমাননার প্রতিদবাদে উপজেলা সদরে একটি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সেখানে তারও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা পৌনে ১১টায় সেখানে পৌঁছে তিনি দেখতে পান, সমাবেশে উপস্থিত এলাকাবাসী পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়ছে।

নিহতদের মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র শাহীন এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র মাহবুব পাটোয়ারীর লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। আর ভোলা সড়র হাসপাতালে রয়েছে মিজান ও মাহফুজ নামে দুজনের লাশ।

এদিকে, ফেসবুকে তার আইডি হ্যাক হয়েছে এমন অভিযোগ জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে শুক্রবার রাতে এক যুবক নিজেই থানায় উপস্থিত হন। বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মু. এনামুল হক জানান, তার ‘ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে’ দাবি করে জিডি করতে শুক্রবার রাতে ওই তরুণ নিজের ইচ্ছায় থানায় যান।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকালে ওই তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে কুরুচিপূর্ণ একটি মেসেজ তার কয়েকজন ফেসবুক বন্ধুর কাছে কাছে যায়। এক পর্যায় কয়েকটি আইডি থেকে ‘মেসেজটির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়ানো’ হয়। এরপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ‘ফেসবুকে প্রতিবাদ শুরু হয়।’ এ অবস্থায় সন্ধ্যার পর ওই তরুণ বোরহানউদ্দিন থানায় জিডি করতে যায় বলে জানায় পুলিশ।

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননা করার গুজব ছড়িয়ে এরআগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার নজির রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায় হামলা চালিয়ে লুটপাটসহ ১২টি বৌদ্ধ মন্দির ও ৩০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে একদল লোক। ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রসরাজ নামে এক মৎসজীবীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে লোকজনকে খেপিয়ে তুলে ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত