সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ নভেম্বর, ২০১৯ ১১:২১

সুন্দরবনের বাধায় দুর্বল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’, বেঁচে গেল বাংলাদেশ

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’র প্রতিরোধের মত এবারও ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-কে প্রতিরোধ করেছে বাংলাদেশের ‘ফুসফুস’ সুন্দরবন। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শেষ পর্যন্ত সুন্দরবনে বাধা পেল। প্রথমে ভারতীয় অংশের সুন্দরবনের সাগরদ্বীপে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করে। এরপর এটি বাংলাদেশের সুন্দরবনের খুলনা অংশে ঢুকে পড়ে। দুই দেশের সুন্দরবনের গাছপালায় বাধা পেয়ে দুর্বল ‘বুলবুলের’ কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যায়। জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতাও কমে আসে।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় জেলাগুলোতে শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। এরআগে দিনভর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়া বয়ে যায়। বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ থাকে নৌযান চলাচল। বিঘ্নিত হয় আকাশপথের যাত্রা। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানোর সব ধরনের কার্যক্রমও বন্ধ থাকে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রোববারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।

গত রাত ১২টার দিকে আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ বলেন, সুন্দরবনের গাছপালায় বাধা পেয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বেশ দুর্বল হয়ে গেছে। এটি রাত নয়টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবন অংশে পৌঁছায়। এরপর ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। এতে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে কিছুটা দেরিতে ও দুর্বল অবস্থায় প্রবেশ করে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার ভোর পাঁচটার দিকে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূল অতিক্রম করে। পরে আঘাত হানে সাতক্ষীরায়। ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি গত রাত নয়টায় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবন দিয়ে অতিক্রম শুরু করে।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দমকা বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে। খুবই কমসংখ্যক লোককে রাস্তায় বের হতে দেখা গেছে।

গতকাল কক্সবাজার উপকূলে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ে। কয়েক শ ঘরবাড়ি পানিবন্দি রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের নাম দিয়েছেন পাকিস্তানের আবহাওয়াবিদেরা। জাতিসংঘের আওতায় গঠিত সংগঠন ইউএনএস্কেপের মাধ্যমে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার আবহাওয়াবিদেরা বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে থাকেন।

চলতি বছর এ নিয়ে মোট সাতটি ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্টি হলো। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় পামুক চীনে, ফণী ভারতের ওডিশা ও বাংলাদেশে, বায়ু ভারতে, হিক্কা, কায়ার ও মাহা ভারতে আঘাত করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত