সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ২২:২৬

সংসদে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

অবশেষে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে তিনি ক্ষমা চান। এ সময় জাতির পিতাকে নিয়ে কিছু বলে থাকলেও সেজন্য জাতির কাছেও ক্ষমা চান তিনি।

এর আগে, রোববার জাপার মহানগর উত্তর শাখার ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন। তার এই বক্তব্য দেশব্যাপী ভীষণ সমালোচনার মুখে পড়ে। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ওঠে সমালোচনার ঝড়। তার এমন বক্তব্যে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় নূর হোসেনের পরিবার। তার মা মরিয়ম বেগম রাঙ্গাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

পরে মঙ্গলবার রাঙ্গার পক্ষে জাতীয় পার্টির দেওয়া বিবৃতিতে এ দুঃখ প্রকাশ করা হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঘরোয়াভাবে আয়োজিত গণতন্ত্র দিবসের আলোচনা সভায় আমার কিছু বক্তব্য নিয়ে কোনো কোনো মহল এবং বিশেষ করে নূর হোসেনের পরিবারের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর নূর হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে কয়েকটি সংগঠনের আলোচনা, বক্তব্য ও বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়-এমনকি তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিও করা হয়। এর ফলে জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

সেই প্রেক্ষিতে কর্মীদের উত্তেজনার মধ্যে বক্তব্য প্রদানকালে অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার মুখ থেকে নূর হোসেন সম্পর্কে কিছু অযাচিত কথা বেরিয়ে গেছে যা নূর হোসেনের পরিবারের সদস্যদের মনে আঘাত করেছে। এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত। প্রয়াত চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদও নূর হোসেনের পরিবারের প্রতি সমব্যথী ছিলেন উল্লেখ করে আরও বলা হয়, অসতর্কভাবে বলে ফেলা আমার বক্তব্যে যে আঘাত লেগেছে তার জন্য আমি নূর হোসেনের মায়ের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে আমার যে বক্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সেসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমি আশা করি এই বিষয়ে আর কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সেই সময়ের সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন যুবলীগ নেতা নূর হোসেনসহ নূরুল হুদা বাবু ও ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো। বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লিখে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশ নূর হোসেনকে গুলি করে হত্যা। এর পর তিন বছর পর ১৯৯০ সালের শেষ দিকে এরশাদ বিদায় নিতে বাধ্য হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত