সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০৪

সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ

আজ (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস। প্রতি বছরের মত এবারও যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সশস্ত্র বাহিনী।

সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সাধারণ জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সমন্বিত আক্রমণ করে তারা। এর পর থেকে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।

দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন ।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আবু মোজাফফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিন বাহিনী প্রধানগণ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা জানাবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৯ জন সেনা, ২ জন নৌ এবং ৩ জন বিমান বাহিনী সদস্যদের ২০১৮-২০১৯ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করবেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বিশেষ সহকারী, সামরিক সচিব, প্রেস সচিব ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে ২১ নভেম্বর ২০১৯ তারিখ বিকাল ১৬০০ ঘটিকায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত ব্যক্তিত্বগণের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিগণ, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টাগণ, মন্ত্রী ও মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, ডেপুটি স্পিকার, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতগণ, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণ, বিচারপতিগণ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, সংসদ সদস্যগণ (ঢাকা এলাকার), প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তাগণ, বাহিনীত্রয়ের প্রাক্তন প্রধানগণ, ২০১৯ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীগণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাদের উত্তরাধিকারীগণ, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং তিন বাহিনীর চাকুরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে তিন বাহিনী প্রধানগণ নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা প্রদান করবেন। ঢাকা ছাড়াও সাভার, বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রংপুর, রাজেন্দ্রপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ১৪০০ ঘটিকা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠান প্রচার করে। বাংলাদেশ বেতার ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ০৭৩০ ঘটিকায় ‘‘বিশেষ দূর্বার’’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত