সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ নভেম্বর, ২০১৯ ১৬:০৮

রায়ে সন্তুষ্ট নুসরাতের মা, ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রীকে

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলার রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন মা শিরিন আখতার।

এদিকে আইসিটি মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমের আট বছরের কারাদণ্ড হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নুসরাত জাহানের মা।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রায় হওয়ার পরপরই ফেনীতে তার গ্রামের নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন কথা বলেছেন।

ওসি মোয়োজ্জেম কী অপরাধ করেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম কী অপরাধ করেছেন, তা সবাই আপনারা দেখেছেন। উনার ভিডিওর কারণে আমি মা হয়ে থানার ভেতরে ঢুকতে পারিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি আরও জানান, ওইদিন নুসরাতকে ভেতরে নিয়ে গেছে। তাদের দুই ক্লাসমেটকে নিয়ে গেছে। তখন বলা হয়েছে, তার সঙ্গে আমাদের গোপন কথা আছে, আপনি ভেতরে ঢুকতে পারবেন না।

‌‘ওসি মোয়াজ্জেম বলেছিলেন, এই ভিডিও আমার কাছে থাকবে, আমি কাউকে দেখাব না। কিন্তু উনি আমানতের খেয়ানত করেছেন।’

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-শামস জগলুল হোসেন সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের ৮ বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এটি বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া কোনো মামলার প্রথম রায়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-শামছ জগলুল হোসেন এজলাসে আসন গ্রহণ করেন। দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে ওসি মোয়াজ্জেমকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এরপর রায় পড়া শুরু করেন আদালত।

মামলার বাদি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওসি মোয়াজ্জেমকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়। ২০ নভেম্বর মামলাটিতে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়েছিল।

১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

১৭ জুন ওসি মোয়াজ্জেম জামিন আবেদন করলে নাকচ করেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পরে তিনি ২ জুলাই হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন। সেখানেও তার জামিন নাকচ হয়।

১৬ জুন শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন মোয়াজ্জেম হোসেন। ২০ জুন সাইবার ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে কারাগারে ডিভিশন পাওয়ার বিষয়ে আবেদন করা হলে বিচারক গত ২৪ জুন তাকে প্রথম শ্রেণির বন্দির (ডিভিশন) সব সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী থানায় মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় এবং তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ এনে ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত