সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ নভেম্বর, ২০১৯ ১৬:২০

মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে রায় মাইলফলক : ব্যারিস্টার সুমন

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলার রায়কে মাইলফলক আখ্যায়িত করেছেন মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, ওসিদের কাছ থেকে জমিদারের মতো আচরণ মানায় না।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রায় হওয়ার পরে আদালত থেকে বেড়িয়ে আসার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন। এর আগে মামলার বাদি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ব্যারিস্টার সুমন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ওসি মোয়াজ্জেম তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। যে কারণে তাকে এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তিনটি ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। একটিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি বলে জানান ব্যারিস্টার সুমন। তাকে ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে ওসি মোয়াজ্জেমকে। জরিমানার এই টাকা নুসরাতের পরিবারকে দিতে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে রায় বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-শামস জগলুল হোসেন সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের ৮ বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। এটি বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া কোনো মামলার প্রথম রায়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-শামছ জগলুল হোসেন এজলাসে আসন গ্রহণ করেন। দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে ওসি মোয়াজ্জেমকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এরপর রায় পড়া শুরু করেন আদালত।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওসি মোয়াজ্জেমকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়। ২০ নভেম্বর মামলাটিতে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়েছিল।

১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

১৭ জুন ওসি মোয়াজ্জেম জামিন আবেদন করলে নাকচ করেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পরে তিনি ২ জুলাই হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন। সেখানেও তার জামিন নাকচ হয়।

১৬ জুন শাহবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন মোয়াজ্জেম হোসেন। ২০ জুন সাইবার ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে কারাগারে ডিভিশন পাওয়ার বিষয়ে আবেদন করা হলে বিচারক গত ২৪ জুন তাকে প্রথম শ্রেণির বন্দির (ডিভিশন) সব সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী থানায় মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় এবং তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ এনে ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত