সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১০:৩১

বিশ্ব এইডস দিবস আজ

আজ বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশে দিবসটি পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

বিশ্ব এইডস দিবস ২০১৯-এর প্রতিপাদ্য হলো- এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- ‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজন; জনগণের অংশগ্রহণ’।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার বাণীতে এইডস প্রতিরোধ ও নির্মূলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতাসংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং গণমাধ্যমসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে এইচআইভি সংক্রমণের হার কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডস এর ঝুঁকি বিদ্যমান। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও মানুষের আচরণ পরিবর্তনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এইডস আক্রান্তদের বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান ও এইডস প্রতিরোধে সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এইডস নির্মূল করতে হলে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, মরণঘাতি এ রোগের কোনো প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার না হলেও বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এইডস এর প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং আমৃত্যু এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়।

এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়াও এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজন; জনগণের অংশগ্রহণ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এইচআইভি সংক্রমণের হার ০.০১% এর নীচে। এ হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে এবং এইডস আক্রান্তদের প্রতি সামাজিক বৈষম্য রোধে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থাসমূহের কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে ১০টি সরকারি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে এইডসের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এটি আরো সম্প্রসারিত হবে। আওয়ামী লীগ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এইচআইভি/এইডস বিষয়ক লক্ষ্য অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে এইডস রোগ নির্মূল করার জন্য জাতিসংঘের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সক্ষম হব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এইডস আক্রান্তদের প্রতি সামাজিক বৈষম্য রোধে সরকারি, বেসরকারি সংস্থাসমূহের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানান। এছাড়াও এবার এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজন, জনগণের অংশগ্রহণ’ তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এবারের প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে এইডস প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরের জনগণ আরও বেশি সোচ্চার হবে এবং এরই ধারাবাহিকতায় এইডস নির্মূলের অঙ্গীকার আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।

উল্লেখ্য, এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে এইচআইভি-এইডস নিয়ন্ত্রণে ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিরোধ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ইউএন এইডসের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডসে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মানুষ মরণঘাতি এ রোগে মারা গেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত