নিউজ ডেস্ক

২৬ জানুয়ারি, ২০১৫ ২৩:১০

ফতোয়া মানতে বাধ্য করা যাবেনা , দিতে পারবেন না যেকেউ-আদালতের পূর্নাঙ্গ রায়

ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেওয়া যেতে পারে। যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তিরা ফতোয়া দিতে পারেন। তবে তা মানতে বাধ্য করা যাবে না। ফতোয়ার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে না।

২০০০ সালের ২ ডিসেম্বর একটি পত্রিকায় ফতোয়া সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের আতিথা গ্রামের এক গৃহবধূকে ফতোয়া দিয়ে হিল্লা বিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়। বিষয়টি নজরে এলে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।

রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বিচারপতি গোলাম রাব্বানী এবং বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার হাইকোর্ট বেঞ্চ সব ধরনের ফতোয়াকে অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত বলে রায় দেন।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর মুফতি মো. তৈয়ব ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ নামে দুই ব্যক্তি আপিল করেন।

২০১১ সালের ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়।...পরে ওই বছরের ১২ মে সর্বোচ্চ আদালত ফতোয়া নিয়ে সংক্ষিপ্ত রায় দেন। এর সাড়ে তিন বছরের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো। আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সংক্ষিপ্ত রায় দেওয়া হয়।

রায়ে বলা হয়, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেওয়া যেতে পারে। তবে এর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে না। ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেওয়া যেতে পারে। যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তিরা ফতোয়া দিতে পারেন। তবে তা মানতে বাধ্য করা যাবে না। ফতোয়ার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে না। রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার ও মর্যাদা ক্ষুন্ন করে, এমন কোনো ধরনের ফতোয়া দেওয়া যাবে না।

২০১১ সালের ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানির এক পর্যায়ে আদালত এ বিষয়ে বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যার জন্য এমিকাস কিউরি হিসেবে বিচারপতি টি এইচ খান, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম ও এএফ হাসান আরিফ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবিএম নূরুল ইসলাম, ড. এম জহির, ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট এম আই ফারুকী ও ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে নিযুক্ত করেন। এরপর সব পক্ষের শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য ৪ মে অপেক্ষমান রাখেন আপিল বিভাগ। পরে ওই বছরের ১২ মে সর্বোচ্চ আদালত ফতোয়া নিয়ে সংক্ষিপ্ত রায় দেন। এর সাড়ে তিন বছরের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত