নিউজ ডেস্ক

২৮ জানুয়ারি, ২০১৫ ০১:৩৫

জীবনী বেগমকে ক্ষতিপূরণ দিল এয়ার এরাবিয়া

ক্ষতিপূরণ পেলেন জীবনী বেগম। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয় এয়ার এরাবিয়া কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারী জীবনী বেগমসহ ৪ জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এয়ার এরাবিয়ার কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা সহ জরিমানার ২৫% ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ ফরহাদ হোসেন।

কিন্তু আদেশের সাথে “লস্ট লাগেজের ক্ষতিপূরণ” কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয় জানিয়েছিলেন বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইউসুফ। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০ নভেম্বর ২০১৪ দেশে ফিরে ৫৪ দিন পর্যন্ত মিসিং লাগেজের কারণে নানারকম অবহেলাজনিত হয়রানি ও অর্থহানির কারণে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

নিয়ম অনুযায়ী, অবতরণের ৭ দিনের মধ্যে মিসিং লাগেজ ট্রেস করা না গেলে একদিকে কম্পেনসেশন প্রসিডিউর চলতে থাকবে এবং একই সাথে লাগেজ ট্রেসিং-এর চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে। পরবর্তী ১৪ দিনের মাথায় অর্থাৎ অবতরণের ২১ দিনের মাথায় যদি লাগেজ ট্রেস করা যায়, তাহলে লাগেজ ফেরৎ দেয়া হবে এবং ট্রেস করা না গেলে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নিয়ম। ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ পরবর্তী যেকোন সময় ঐ লাগেজ ট্রেস করা গেলে অবশ্যই লাগেজ ফেরত দিতে হবে কিন্তু কোনভাবেই পরিশোধিত ক্ষতিপূরণ যাত্রীর কাছ থেকে ফেরত চাওয়া যাবেনা।

৫৪ দিন পর মোবাইলকোর্টে জরিমানা হওয়ার পর মাত্র ৪ দিনের মাথায় ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩০০ ডলার পান জীবনী বেগম। এদিকে কর্তৃপক্ষের তৎপরতাকে সাধুবাদ জানালেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি অপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ। জীবনী বেগমের ভাষ্যমতে তাঁকে ৪০ কেজি (ভ্যালু আনডিক্লেয়ার্ড) চার্জ ছাড়া এলাও করা হয়েছিল এবং অতিরিক্ত ৪ কেজির জন্য চার্জ দিতে হয়েছিল।

কাগজপত্র মতে, এর মধ্যে তাঁর হারিয়ে যাওয়া মূল লাগেজটির ওজন ছিল ৩১ কেজি। নিয়ম এবং হিসেব অনুযায়ী তিনি আনচার্জড এলাউড ওজনের কমপক্ষে ২০ কেজি এবং এবং চার্জড ওজনের পুরোটাই ৪ কেজি, অর্থাৎ মোট ২৪ কেজির প্রতি কেজি ২০ ডলার হারে ৪৮০ ডলার পাবেন। তাহলে কিসের ভিত্তিতে এই ৩০০ ডলার- প্রশ্ন রাখেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  ইউসুফ।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, লোকাল কর্তৃপক্ষের মৌখিকভাবে ৩০০ ডলার ক্ষতিপূরণের ভিত্তি হিসেবে লাগেজে কি কি মালামাল ছিল এবং জীবনী বেগমের নিকট থেকে জানা তথ্যমতে এই ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হয়ে থাকতে পারে। “নো ম্যান... হু হ্যাজ গিভেন ইউ দ্য রাইট টু আস্ক এন এরাইভাল প্যাসেঞ্জার ফর ডিটেইল অব গুডস ইন এন আনডিক্লেয়ার্ড লাগেজ? বলেন মুহাম্মদ ইউসুফ। তিনি আরো জানতে চান, কেজি মাপে এলাউ করেছেন বলে কেজি মাপে চার্জ করা হচ্ছে। মালামালের মুল্যমানের ভিত্তিতে নয়!

কোম্পানি থেকে জীবনী বেগমের পূনঃক্ষতিপূরণ এসেছে। ৩০০ ডলারের পরেও অতিরিক্ত আরো ১৬৫ ডলার। অর্থাৎ মোট ৪৬৫ ডলার তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেলেন। লোকাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যদিও নিয়ম অনুযায়ী জীবনী বেগমের ৪৬০ ডলার কম্পেনসেশন হয়, তথাপি কোম্পানি স্পেশাল কনসিডারেশনে তাঁর ক্ষেত্রে ৫ ডলার বেশী যোগ করে নির্ধারণ করেছে। সর্বশেষ পরিশোধিত ৪৬০ ডলার যদি নিয়মানুযায়ী হয়, পূর্বের সেটেল্ড ৩০০ ডলার কি অনিয়মানুযায়ী ছিল? লোকাল কর্তৃপক্ষ আদালতকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন এবং আশা করা যায়, যথাযথ যুক্তি দিয়ে আরো সহযোগিতা করবেন, বলে যোগ করেন মুহাম্মদ ইউসুফ।

জীবনী বেগমকে অতিরিক্ত ৫ ডলার প্রদান করাকে অনুকম্পা হিসেবে আখ্যা দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ বলেন- জীবনী বেগমের উচিত হবে না এই ধরনের অনুকম্পা গ্রহণ করা। তবে যাত্রীদের যথাযথ সেবা এবং ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারী কতৃপক্ষ তাঁদের পাশেই থাকবে ও সহযোগীতার হাত প্রসারিত রাখবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।







আপনার মন্তব্য

আলোচিত