সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ২৩:১৭

দ্বিতীয় দফায় সাংসদ লিটনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন

দ্বিতীয় দফায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। মদ্যপ অবস্থায় শিশু সৌরভকে গুলি করার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) গাইবান্ধা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান শিকদারের আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন।

সরকার পক্ষে কোর্ট ইন্সপেক্টর এনামুল হক এ সময় তার জামিন আবেদনের বিরোধীতা করেন। এরপর উভয় পক্ষের বক্তব্য শেষে বিচারক মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে ৮ নভেম্বর এমপি লিটনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন তার প্রথম দফা জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।

তারও আগে প্রতিবেশী হাফিজার রহমান মণ্ডলের বাড়ি ভাঙচুরের মামলায় অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল হাসান ইউসুফের আদালত এমপি লিটনকে জামিন দিয়েছিলেন।

আইনজীবীদের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর সোয়া একটার দিকে এমপি লিটন তার আইনজীবীদের নিয়ে আদালতে আসেন। জামিন শুনানি শুরুর পর আদালতের বিচারক আদেশ দানের জন্য সময় নেন। এসময় তাকে কোর্ট ইন্সপেক্টরের হেফাজতে থাকতে হয়। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে অন্তর্বর্তীকালিন জামিনের আদেশ দেয়া হলে আইনজীবীরা জামিনের কাগজপত্র নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেন।

এমপি লিটনের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, এর আগে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন পর্যন্ত তাকে জামিন দেয়া হয়। সোমবার (২৩ নভেম্বর) সংসদ অধিবেশন শেষ হলে আজ মঙ্গলবার সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এমপি লিটন স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন।

উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ভোরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এমপি লিটনের পিস্তলের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয় গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাহাদত হোসেন সৌরভ (৯)। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে শিশু সার্জারি বিভাগে ২৪ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে সে বাড়ি ফেরে। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে একমাত্র আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

একইদিনের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর সুন্দরগঞ্জ থানায় আরও একটি মামলা করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ গ্রামের প্রতিবেশী হাফিজার রহমান।

সৌরভ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ঢাকাসহ সারাদেশে এমপি লিটনকে গ্রেপ্তার দাবিতে আন্দোলন গড়ে ওঠে।

এরপর ১৪ অক্টোবর রাতে উচ্চ পর্যায়ের সবুজ সংকেত পেয়ে রাজধানীর উত্তরার বোনের বাসা থেকে এমপি লিটনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরের দিন ভোরে তাকে মাইক্রোবাসে করে গাইবান্ধা ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাকে গাইবান্ধা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল হাসান ইউসুফ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

১৫ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এমপি লিটন গাইবান্ধা কারাগারে আটক ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত