নিউজ ডেস্ক

১৫ মার্চ, ২০১৫ ১৫:৪৩

লণ্ডনে বিশেষ সতর্কতা ও নজরদারিতে তারেক রহমান

পলাতক বিএনপি নেতা ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর ‘বিশেষ সতর্কতা’ ও নজরদারি জারি করেছে ব্রিটিশ হোম অফিস। আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কারণে এবং সহিংসতা উস্কে দেওয়ার অভিযোগে তারেকের বক্তব্য বাংলাদেশের যে কোন গণমাধ্যমে প্রচারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশের উচ্চ আদালত।

তারেক রহমান যখন দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একের পর এক বিষোদগার করে যাচ্ছিলেন, তখন থেকেই এই বিষয়টি গুরুত্ব পেতে থাকে বলে জানায় সূ্ত্র।

ওই সময়ই, ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ এনে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারি বরাবরে একটি পিটিশন দাখিল করে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, যুক্তরাজ্য। ব্রিটেনে বসে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বাংলাদেশে সংঘটিত সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তারেকের নির্দেশেই হচ্ছে এমন অভিযোগতো আগে থেকেই করে আসছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

সূত্র বলছে, তারেক কমিউনিটিতে সহিংসতা উস্কে দিচ্ছেন মর্মে প্রমাণ পেয়েই ব্রিটিশ হোম অফিস তাকে সতর্ক করে দিয়েছে।

ওয়ান ইলেভেনের ফসল যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেই সরকারের আমলে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার কথা বলে লন্ডনে চলে যান তারেক রহমান। এরপর অনেক দিন নীরব ছিলেন তিনি। যে পাসপোর্ট নিয়ে লন্ডন পৌঁছান তার মেয়াদও শেষ হয় ২০১৩ সালে।

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যমতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পাসপোর্ট নবায়নের আর কোনো আবেদন তারেক করেননি। এই মূহূর্তে তিনি কোন্ ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে লন্ডনে আছেন, এ বিষয়টি তারেক বা তার দল কখনও পরিষ্কার না করলেও বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েই তিনি অবস্থান করছেন ব্রিটেনে।

মেয়াদ শেষে নিজ দেশের পাসপোর্ট নবায়ন না করায় পাসপোর্টবিহীন হলেও রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকায় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষাতেই তিনি বসবাস করছেন লন্ডনে।

সূত্রগুলো জানায়, ব্রিটিশ হোম অফিসের পক্ষ থেকে তারেককে দেওয়া হয়েছে ট্রাভেল ডকুমেন্ট, যেটি দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সফর করতে পারবেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও তিনি ভোগ করতে পারেন, যদি এগুলোর জন্যে তিনি আবেদন করেন।

এই সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাড়িভাড়া, কাজে না থাকলে বেকার ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা, সন্তানের ফ্রি স্কুল-সুবিধা, কাউন্সিল ট্যাক্স বেনিফিট ইত্যাদি।

অবশ্য এসব সুবিধা তারেক কতটুকু নিচ্ছেন তা নিয়ে কমিউনিটিতে বিভিন্ন গুজব-গুঞ্জন থাকলেও তারেক বা তার দলের স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে এবিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানা সম্ভব হয়নি।

তার নির্বাসন জীবন শুরু থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের খবর বাজারে ছড়িয়েছে। ‘নিজের রাজকীয় প্রাসাদে আছেন তারেক’, ‘কাউন্সিল ট্যাক্স জালিয়াতিতে অভিযুক্ত তারেক’, ‘লন্ডনে তারেকের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হচ্ছে’ এমন খবর নিয়মিতই ছড়াচ্ছে।

সবশেষ একটি খবর ছড়িয়েছে, আগামী ১ এপ্রিল দেশের ২০০টি স্পটে একযোগে হামলা চালানোর একটি পরিকল্পনা করেছেন তারেক রহমান। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন এপ্রিল ফুল’।

অবশ্য এই অভিযোগগুলো শুধুই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বিএনপি’র স্থানীয় নেতারা এমনটি দাবি করলেও এগুলো অস্বীকার করে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে কোনো প্রতিক্রিয়াও দেননি তারেকের পক্ষে।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি ব্রিটিশ সোসাইটিতে খুবই গুরুত্বসহ দেখা হয় বলে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছ থেকে তারেক রহমানের ব্রিটেন বসবাসের অফিসিয়াল বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, গ্রেটার লন্ডনের কিংস্টোনের মত ব্যয়বহুল এলাকায় একটি ব্যয়বহুল বাড়িতেই বসবাস করছেন তারেক রহমান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত