সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ জুন, ২০১৭ ২২:২২

জনগণের নয়, আ.লীগের প্রধানমন্ত্রী বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত: খালেদা জিয়া

রাঙামাটি সহ দেশের পাঁচ জেলায় পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এপ্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেছেন “জনগণের নয়, আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত। যেখানে চট্টগ্রামে, রাঙামাটিতে ঘটনা ঘটল সকাল ১০টা কত মিনিটে, সেটা জানার পরও বেলা ১২টা কত মিনিটে হাসিনা দেশত্যাগ করলেন।”

“কেন? দেশে এত বড় ঘটনা, এখন পর্যন্ত ১৫২ জন মারা গেছে, আরও হয়ত মারা যাবে কিংবা অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এত বড় ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বিদেশে যান? এটা কি জনগণের প্রতি তার (শেখ হাসিনা) দায়িত্ববোধ? আজকে (শনিবার) তিনি দেশে ফিরেছেন। এসে মায়াকান্না দেখবেন হয়ত।”

চাল ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়েও সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি প্রধান।

শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানের ইমানুয়েল সেন্টারে ২০-দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের শোকসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে যেভাবে ভূমি ধসে মানুষগুলো মারা গেল, তাদের উদ্ধার করা, তাদের পুনর্বাসনে বর্তমান সরকারের কোনো চিন্তা-ভাবনা আমরা দেখছি না, কোনো দায়িত্ববোধও দেখছি না।”

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, নৌকা ডুবে গেছে, এই নৌকাকে আর হাজার লোক দিয়েও টেনে তুলতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘নিজেরা হেলিকপ্টারে বিভিন্ন জায়গায় উদ্বোধনের নামে যাচ্ছেন, কিছু উদ্বোধন করছেন। আর সেখানে ওরা নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের নামে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। নৌকা যে ডুবে গেছে, এটা বুঝতে পারছেন না। এই নৌকা ডুবে গেছে, এই নৌকাকে আর আপনার হাজার লোক দিয়েও টেনে তুলতে পারবে না।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘নৌকার সঙ্গে যাদের রেখেছেন, আপনার আশপাশে, ডানে-বাঁয়ে যারা আছেন, যারা অন্য দল করে আপনার দলে এসেছেন—তারা কী জিনিস। আপনি কিন্তু নিজেই বলে দিয়েছেন তারা কী খায়, কী রকম তাদের লাইফ স্টাইল। এসব লোককে দিয়ে দেশের কিছু হবে না। এরা দেশের কিছু করতে পারে না। আপনিও পারবেন না।’

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে খালেদা বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। হাসিনাকে বাদ দিতেই হবে, ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতেই হবে।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে সহায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে প্রত্যেক ভোটার ভোট দিতে যাবে। সবাই এটা চায়, সারা পৃথিবীর মানুষ এটা চায়। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশে এই নির্বাচন হবে।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই নির্বাচনের ফলাফল আপনারা বুঝতে পারবেন। ইনশাআল্লাহ, বিএনপি ও ২০-দলীয় জোট জিতে এসে আমরা ভিশন ২০৩০-এ যা যা ওয়াদা করেছি, সবকিছু করব। এর বাইরে আরও কিছু করার থাকলে সেটাও করব।’

একাদশ নির্বাচন প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমি জনগণের উদ্দেশে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের চেহারা আপনারা ভালোভাবে দেখে নিয়েছেন। তাদের হাত থেকে বাঁচতে চান, সকলে মিলে গণতন্ত্রের পক্ষে, দেশের শান্তি-উন্নয়ন এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে থাকুন। সেই রকম দলই হলো বিএনপি ও ২০ দল। যাদের দেশপ্রেম আছে, প্রতিটি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে।’

খালেদা জিয়া ঈদে মানুষের ঘরে ফেরায় মহাসড়কে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ এবং পার্বত্য জেলায় পাহাড়ধসে সরকারি অব্যবস্থাপনার কড়া সমালোচনা করেন। তিনি মনে করেন, মহাসড়কে পাবলিক টয়লেট করা উচিত।

অনুষ্ঠানে প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান খালেদা জিয়া। জাগপার সভানেত্রী রেহানা প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত