নিউজ ডেস্ক

২৯ মে, ২০১৫ ১৬:১৯

প্রধানমন্ত্রী খালেদার পরামর্শ নেবেন, বিএনপির আশা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনার আগে বিষয়বস্তু ঠিক করতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ‘পরামর্শ করবেন’ বলে আশা করছে বিএনপি।

দলটির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন শুক্রবার সকালে এক সংবাদ ব্রিফিঙে বলেন, “পত্রিকায় দেখেছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনেক বিষয় নিয়ে কথা হবে। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় সেখানে তুলে ধরা উচিৎ।

“আমরা আশা করি এর আগে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন। বিএনপির বিশেষেজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গেও এ বিষয়ে সরকার কথা বলতে পারেন।”

রিপন বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন কিংবা সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি কোনো দলের একক দাবি নয়, এগুলো জাতীয় দাবি।

“আমরা চাই, জাতীয় এসব ইস্যু বাংলাদেশের দাবি হিসেবে যেন উত্থাপন করা হয়।”

দুই দিনের সফরে আগামী ৬ জুন প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসছেন নরেন্দ্রে মোদী।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “আমরা কয়েকদিন আগেও বলেছি, বিএনপি কখনো ভারতবিরোধী দল নয়। আগেও ছিল না, এখনও নই, ভবিষ্যতেও নয়। আমাদের এজেন্ডা হচ্ছে- দেশের মানুষের স্বার্থে কথা বলা, দেশের উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলা।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় এই বিএনপি নেতা বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ঢাকা আসছেন। ভারত কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি করলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে। এটাই হচ্ছে বিউটি অব ডেমোক্রেসি।”

মোদীর ‘প্রশাসনিক নিরপেক্ষতার’ প্রশংসা করে রিপন বলেন, “ভারতের জনপ্রশাসন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার হয় না।”

অন্যদিকে বাংলাদেশে জনপ্রশাসন “রাজনীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে; দলবাজ, দলকানা প্রশাসনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে” বলে অভিযোগ রিপনের।

ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে ঐক্যমত্য সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, “আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী যখন নরেন্দ্র মোদীর কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরবেন, তখন ওই দাবিগুলো যেন জাতীয় দাবি হিসেবে তুলে ধরা হয়।... আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি নয়, জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে দাবি উপস্থাপন করা হচ্ছে – এটা যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারেন।”

মানবপাচার প্রসঙ্গে

সাগরপথে মানবপাচার ঠেকাতে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা রিপন।

তিনি বলেন, ‘‘সাগরবক্ষে মানুষ ভাসছে। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে দেশান্তরী মানুষের কঙ্কাল পাওয়া যাচ্ছে। অথচ সেদিকে নজর না দিয়ে সরকার খুব তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলছে, তারা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে।”

দেশে 'নিরব দুর্ভিক্ষ' চলছে মন্তব্য করে রিপন বলেন, "কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ ভিটে-মাটি বিক্রি করে দেশান্তরী হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার প্রকৃত চিত্র আড়াল করতে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধির বৃদ্ধি দেখাচ্ছে।”

মানব পাচারকারীদের সঙ্গে যারা অবৈধভাবে দেশান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে রিপন।

“যারা কর্মের অভাবে দেশ ছাড়ছে, তাদের শাস্তির কথা বলা পরিতাপের। আমরা এহেন বক্তব্যের নিন্দা জানাই।”

তিনি প্রশ্ন করেন, “সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কি কেউ দেশান্তরী হয়?”

সমুদ্রে ভাসমান মানুষকে ফিরিয়ে এনে অবিলম্বে তাদের কাজ দিয়ে পুনর্বাসনের দাবি জানান রিপন।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত