সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ জুন, ২০১৮ ১৪:১১

সিএমএইচে যাবেন না খালেদা: ফখরুল

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাসেবা নেবেন না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১৭ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলা হচ্ছে পিজিতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল-বিএসএমএমইউ) পাঠানো হবে, সেখানে ভালো ভালো ডাক্তার আছে। আবার বলছেন সিএমএইচে পাঠানো হবে। সিএমএইচ হাসপাতালে রাজনৈতিক কারণে ভর্তি নেয় না। সরকারের মনোভাব খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দেওয়া। কাল বিলম্ব না করে যে হাসপাতালে তিনি (খালেদা জিয়া) ভর্তি হতে চাচ্ছেন সেখানে ভর্তি করা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।

তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালের কথা কেন বলছি? তার যে রোগগুলো তা শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় নয়, তার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। খালেদা জিয়া যেসব অসুস্থতায় আক্রান্ত তার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ দরকার। পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের থেকে অবনতি ঘটেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল (শনিবার) যতটুকু জানতে পেয়েছি উনি এখন সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারছেন না। ব্যক্তিগত কাজকর্ম করার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছে। যে চোখে অপারেশন হয়েছে তা আরও লাল হচ্ছে। ঘাড়ের ব্যথা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বাম হাতের আঙুলগুলো সার্বক্ষণিক ব্যথা করছে। এ কারণে হাত দিয়ে তিনি স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না। কোমড়ের ব্যথা বাম পায়ের তলা পর্যন্ত ছড়িয়েছে। এটা খুবই মারাত্মক।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উনার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা। এটাকে নরমাল এক্সরে মেশিনে, নরমাল সিটি স্ক্যান বা নরমাল এমআরআইতে হবে না। এ জন্য স্পেশাল এমআরআই, স্পেশাল সিটি স্ক্যান ও স্পেশাল হসপিটালাইজেশন প্রয়োজন। এসব জিনিসগুলো দিতে সরকার কোনোভাবেই রাজি হচ্ছে না। এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে আজকেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া দরকার।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বলছেন আমরা ইউনাইটেড হাসপাতাল বলছি কেন, বলছি এ জন্য আমার আস্থাটা ওখানে। রোগীর যেই ডাক্তারের কাছে আস্থা থাকে সেই ডাক্তারের কাছে যায়। আমার মনে করি, ইউনাইটেডে গেলে উত্তম চিকিৎসা হবে।

ফখরুলের দাবি, খালেদা জিয়াকে যেভাবে নিঃসঙ্গ রাখা হয়েছে এটা মানবাধিকারের বিপক্ষে, জেল কোডের বিপক্ষে। একজন বন্দিকে নির্জনভাবে রাখতে পারেন না। এটা বেআইনি। জেল কোডে কোথাও বলা নাই যে, আমি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারব না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনাকে যদি স্কয়ারে নিতে পারেন। প্যারোলে বিদেশে পাঠাতে পারেন। নাসিমা সাহেবকে যদি ল্যাবএইডে নিতে পারেন। জলিল সাহেবকে ল্যাবএইডে দিতে পারেন তাহলে দেশনেত্রীকে ইউনাইটেডে দেবেন না কেন, কারণ কী? কারণ একটাই, আপনারা তার ক্ষতি করতে চান। তার জীবন বিপন্ন করতে চান। সেই কারণে আপনারা এ পথ বেঁচে নিয়েছেন।

খালেদা জিয়া সরকারের কাস্টডিতে আছেন। বিনা চিকিৎসায় তার কিছু হলে দায় সরকারকে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর থেকে আমাদের আন্দোলন চলছে, যা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে আমাদের বিজয় অনিবার্য।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত