সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ অক্টোবর, ২০১৮ ২৩:২৪

শেষ মুহূর্তে স্থগিত ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার’ বৈঠক

শেষ মুহূর্তে স্থগিত হয়ে গেছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে বৈঠকটি স্থগিত করা হয়। এনিয়ে নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানান নি।

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে নিজেদের অভিন্ন দাবিদাওয়া এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করতে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে বসার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭টায় এ বৈঠকটি প্রথমে আইনজীবী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় তা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় স্থানান্তর করা হয়। রাত ৯টায় আ স ম আবদুর রবের বাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত করা হয়।

দু’দফায় স্থান নির্ধারণ করেও শেষ মুহূর্তে এসে কেন বৈঠকটি স্থগিত করা হলো সে বিষয়ে যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা কিছু বলতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের বাসায় তিন পক্ষের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় এটি রাত ৯টায় আ স ম আবদুর রবের বাসায় স্থানান্তর করা হয়। পরে এই বৈঠকটি স্থগিত করা হয়।

কেন স্থগিত করা হলো- এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘এত কিছু বলতে পারব না। শুধু এটুকু জানি বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে আবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দিন-তারিখ-স্থান ঠিক হলে তখন মিডিয়াকে জানানো হবে’।

বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে যাওয়ার আগে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন, আসন ভাগাভাগি ও নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশ পরিচালনার বিষয়টির চূড়ান্ত ফয়সালা করতে চান যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। এ লক্ষ্যে তিন পক্ষ আলাদা আলাদাভাবে দাবি এবং লক্ষগুলোর একটি প্রাথমিক খসড়াও তৈরি করে। এখন এসব দাবিদাওয়া এবং লক্ষ্যগুলো সমন্বয় করার কাজ চলছে।

প্রাথমিকভাবে সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য ঠিক হয়েছে। বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই আন্দোলনে নামবে বিএনপি-যুক্তফ্রন্ট-জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া।

এছাড়াও তিনপক্ষ মিলে যে জোট হচ্ছে, সেই জোটের নাম কী হবে, সেটাও চূড়ান্ত হওয়ার কথা। কিন্তু বৈঠক বাতিল হওয়ায় বিষয়টি ঝুলে গেল নতুন করে।

এছাড়া বিএনপি-যুক্তফ্রন্ট-ঐক্যজোটের নেতাদের মধ্যেও মতের অমিল এবং সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে দাবি করেছে একাধিক সূত্র। বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় ঐক্যপ্রক্রিয়ার বৈঠকের আগের দিন অর্থাৎ বুধবার যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান পরবর্তী বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান। বৈঠকে অংশ নেয়া থেকে পিছিয়ে যান সাবেক রাষ্ট্রপতি, যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও। এ অবস্থায় আ স ম আবদুর রবের বাসায় বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এই বৈঠকও স্থগিত করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, ড. কামাল হোসেনসহ তিন পক্ষের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকটি হতে আরও সময় লাগতে পারে। এর আগেই দাবি ও লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হবে। এরই মধ্যে খসড়া সম্পন্ন করা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে আসন্ন জোটের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’। সাত দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে। যদিও যুক্তফ্রন্টের আরেক শীর্ষ নেতার মতে, নাম ‘জাতীয় যুক্তফ্রন্ট’ও হতে পারে। তবে সবকিছুই চূড়ান্ত হবে শীর্ষনেতাদের বৈঠকে।

প্রাথমিকভাবে যেসব দাবিকে সামনে রেখে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত