সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ নভেম্বর, ২০১৮ ২২:৪৭

রিজভীকে আইনি নোটিস সরকারি কর্মকর্তাদের

নির্বাচনে ‘কারচুপির ষড়যন্ত্র করতে’ ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে ‘গোপন বৈঠকের’ অভিযোগে জবাবে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।

নোটিশে রিজভীর বক্তব্যকে অসত্য, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর অভিহিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অন্যাথায় এই ‘অসত্য ও মানহানিকর’ বক্তব্যের কারণে রিজভীর বিরুদ্ধে পানিসম্পদ সচিব দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

রোববার (২৫ নভেম্বর) কবির বিন আনোয়ারের পক্ষে এই আইনি নোটিস পাঠান সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।

নোটিসে বলা হয়, গত ২৪ নভেম্বর রুহুল কবির রিজভী একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই দিনই দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে ওই সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর বক্তব্য প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেছেন, নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রতিনিয়ত গোপন বৈঠক চলছে। প্রশাসন ও পুলিশের বিতর্কিত ও দলবাজ কর্মকর্তারা জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় বসানোর জন্য নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন।

রিজভী বলেন, গত ২০ নভেম্বর রাতে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের কনফারেন্স রুমে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল ইসলাম, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, বেসামরিক বিমান পরিবহন সচিব মহিবুল হক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার আলী আজম ও প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-১ কাজী নিশাত রসুল উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পুলিশের পক্ষ থেকে র‌্যাব, ডিএমপি ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান রিজভী।

নোটিসে উল্লেখ করা হয়, সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে সারাদেশের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সেটআপ ও প্ল্যান রিভিউ করা হয়। ডিআইজি হাবিব জানান, পুলিশের সূত্রের খবর অনুযায়ী ৩৩টি সিট নৌকার কনফার্ম আছে এবং ৬০ থেকে ৬৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বাকি আসনগুলোতে কোনো সম্ভাবনা নেই। কাজেই সাংঘাতিক কিছু করা ছাড়া এটি উৎরানো যাবে না।

রিজভী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আলোচনা শেষে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশন থেকে বিএনপি-ফ্রন্টকে চরম অসহযোগিতা করা হবে। যতই চাপ দেওয়া হোক, প্রশাসনে হাত দেওয়া যাবে না, ধরপাকড় বাড়ানো হবে। প্রার্থীকে গুম-খুন করে এমন অবস্থা তৈরি করা হবে, যেন তারা নির্বাচন থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

নোটিসে রিজভীর এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলা হয়, কবির বিন আনোয়ার প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি তার নিষ্ঠা, নিরপেক্ষতা ও কাজের প্রতি গভীর নিবেদনের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং সর্বশেষ সরকারের সচিব পদে নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি কখনও কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে জড়িত ছিলেন না বা রিজভীর বক্তব্য অনুযায়ী ২০ নভেম্বর বা অন্য কোনো দিনেও কোনো বৈঠকেও অংশ নেননি এবং রিজভী যেসব অভিযোগ করেছেন, তার কোনো সিদ্ধান্তই নেননি। ফলে রিজভীর অভিযোগ ভিত্তিহীন ও অসত্য।

নোটিসে বলা হয়, রিজভীর এই বক্তব্যে পানিসম্পদ সচিবের সম্মান ও ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই তার ‘অসত্য, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ বক্তব্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। অন্যাথায় রিজভীর বিরুদ্ধে তার অসত্য ও মানহানিকর বক্তব্যের জন্য পানিসম্পদ সচিব দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত