সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:০৪

ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান মিজান চৌধুরীর

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) নির্বাচনী এলাকার সকল ভোটারসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী।

এছাড়া দলের কারাবন্দী নেতাকর্মীদের প্রতি ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, "নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছে শাসকদলসহ তার বাহিনী। এই প্রহসনের নির্বাচনে আমার ও দলীয় প্রতীকের প্রতি আস্থাশীল নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মানুষের প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞ।"

বুধবার (২ জানুয়ারি) বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে তিনি ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনাদের ভোট ইনশাল্লাহ বৃথা যাবে না। আপনাদের রায় ডাকাতি  করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে আরেকটি নীলনকশার রায়। সত্য কখনো চাপা থাকে না, তাই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবেই। আমাদের লড়াই এখন আপনাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।"

তিনি বলেন, "ফরমায়েশি রায়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করি। সারা দেশের মতো আমার নির্বাচনী এলাকায়ও ছিল প্রতিকূল পরিবেশ। নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী সভা-সমাবেশে অব্যাহত ভাবে বাধা দেওয়া হয়। আমরা সেই সব বাধা নানা কৌশলে অতিক্রম করে এগোতে থাকি। ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে শাসকদল কূটকৌশল শুরু করে।"

আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশও হাত মিলিয়ে ভোটের আগের রাত ও ভোটের দিন সর্বশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে এমন অভিযোগ এনে মিজানুর রহমান আরও বলেন, পুলিশ, প্রশাসন ও সরকার দলের ক্যাডারদের হামলা, নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি গ্রামের দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে ধরপাকড়ের চেষ্টা, পুলিশি হয়রানি অব্যাহত ভাবে চলে। গণ গ্রেপ্তারের চেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করায় আমার প্রচারণা ও সভা-সমাবেশ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রচারণায় যোগ দেওয়া নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হামলা-মামলা, প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে শুরু থেকেই আমাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে সরকার দল, পুলিশসহ  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনের দিন শতাধিক কেন্দ্রে ভয়ভীতি প্রদর্শন, গোলযোগ সৃষ্টি করে। কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা ও সরকার দলের ক্যাডাররা। নির্বাচনের নামে রীতিমতো ভোট ডাকাতি হয়েছে। ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।"

এ অবস্থায় ভোটের দিন বেলা তিনটায় ছাতকে ও পরদিন সুনামগঞ্জ জেলা শহরে পাঁচ আসনে দলীয় প্রার্থীরা মিলে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করি। এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

ছাতক ও দোয়ারাবাজারবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, "এ নির্বাচনে জাতি জিতেছে, হেরেছে আওয়ামী লীগ। ধানের শীষ বিজয়ী হয়েছে, হেরেছে শাসক দল। ভোটযুদ্ধে আসলেই বাস্তবিক অর্থে একটি যুদ্ধ হয়েছে। এ যুদ্ধে একদিকে ছিলেন নিরস্ত্র জনতা, অন্যদিকে পুলিশসহ সশস্ত্র আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ভোটের আগের দিন অন্তত শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। ভোটের দিন ভোটাধিকার রক্ষা করতে গিয়ে আরও অন্তত দেড়শতাধিক আহত হয়েছেন। আমি ভোটের অধিকার রক্ষায় নেতাকর্মী জনগণকে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। এখন আন্দোলন হবে ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে। নির্বাচনী এলাকার ৯৬টি সেন্টার দখল করে ভোট ডাকাতি হয়েছে। সব এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রধারী ক্যাডার ও পুলিশের অপতৎপরতায় সাধারণ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এসব সেন্টারে ভোট গণনার ফলাফলে নানা রকম অসঙ্গতি আছে। তাই কোনোভাবে এই নির্বাচন মেনে নেওয়া যাবে না।"

আপনার মন্তব্য

আলোচিত