নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:৫৯

শপথ গ্রহণ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ঐক্যফ্রন্ট

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের ৭ সংসদ সদস্য শপথ নেবেন কি না এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্তে পৌছতে পারেনি এই জোট। তবে বৃহস্পতিবার তারা শপথ নিচ্ছেন না এটা প্রায় নিশ্চিত। পরবর্তীতে শপথ নেবেন কি না তা দলীয় ফোরাম ও জোটগতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের সাংসদরা শপথ নেবেন বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি)।

নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জিততে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নিরঙ্কুশ এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য আওয়ামী লীগ অভিনন্দনে সিক্ত হতে থাকলেও ঐক্যফ্রন্ট শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জেতানোর জন্য ব্যাপক কারচুপি-জালিয়াতি হয়েছে।

এরপর ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও পরে সন্ধ্যায় তাদের জোটের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কারচুপির প্রতিবাদে বিএনপি ও জোটের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন না। তারা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান জানিয়ে দেন।
 
সেদিন (৩১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেহেতু আমরা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছি, সেহেতু শপথ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জোটভুক্ত গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বুধবার বলেন, ‘শপথ নেওয়ার সময় বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আর আমরা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আছি শপথ নিচ্ছি না।’

বিএনপির নির্বাচিত সাত এমপি হলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বগুড়া-৬ আসন), মোশারফ হোসেন (বগুড়া-৪), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২) ও হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)। আর গণফোরামের দুই এমপি হলেন- সুলতান মোহাম্মদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২) ও মোকাব্বির খান (সিলেট-২)।

গুঞ্জন রয়েছে বিএনপির সদস্যরা শপথ না নিলেও গণফোরামের নির্বাচিত দুই জন সংসদ সদস্য শপথ নিতে পারেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলের সাধারণ সম্পাদক মন্টু বলেন, ‘জোটগতভাবে নির্বাচন ও আন্দোলন করছি। এখনো জোটেই আছি। সুতরাং যা করার জোটগতভাবেই করবো। আলাদা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমি নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে ছিলাম। তবে নির্বাচন পরবর্তী সিদ্ধান্ত দলের মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলতে পারবেন।’

সিলেট-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত গণফোরামের ‘উদীয়মান সূর্য প্রতীক’ নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘যে এলাকার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তাদের মতামতের বিষয় আছে। আমি একটা দলের মনোনয়নে নির্বাচিত হয়েছি, সে দলের বর্ধিত সভা আছে ৫ জানুয়ারি। দলের সিদ্ধান্তেরও একটা বিষয় আছে। তাছাড়া শপথ গ্রহণ বৃহস্পতিবার শুরু হলেও ৯০ দিন সময় আছে, এর মধ্যেই ঠিক করা হবে আমি সংসদে শপথ নেবো কি নেবো না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত