সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ আগস্ট, ২০১৫ ১৬:২৯

জয়কে ‘হত্যার ষড়যন্ত্র’: জাসাস নেতার বিরুদ্ধে মামলা

প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘হত্যার ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে জাসাস ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা হয়েছে।

এই মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন হচ্ছেন জয়কে অপহরণের ষড়যন্ত্রের দায়ে মার্কিন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত রিজভী আহমেদ সিজারের পিতা। ওই ষড়যন্ত্রে মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তখন উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন তিনি।

জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সোমবার রাতে ঢাকার পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুর রহমান।

মামলার বাদী পরিদর্শক ফজলুর রহমান জানান, “২০১১ সালের আগে থেকেই সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র চলছিল। এ ঘটনায় জাসাস নেতা জড়িত থাকতে পারেন এমন তথ্য-প্রমাণ পেয়ে তাকে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে।”

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মামুন বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। পরিবার নিয়ে কানেটিকাটের ফেয়ারফিল্ড কাউন্টিতে বসবাস করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায়। জয়ের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত গোপন তথ্য পেতে এফবিআইএর এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে গত ৪ মার্চ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

অপহরণের ওই ষড়যন্ত্রের ঘটনা উদঘাটনের পর নতুন করে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জয়। নিজের ফেসবুকে করা কমেন্টে এর জন্য বিএনপি নেতাদের দায়ী করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে সিজারের সাজা ঘোষণার পর চলতি বছরের ৯ মার্চ সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন,“আমাকে যখন কেউ হত্যার চেষ্টা করছে, সেটিও তখন আমি খুবই ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবে নিচ্ছি। যারা এর জন্য দায়ী, তারা বিএনপির যতো উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বই হোক না কেন, আমি তাদের হদিস বের করে বিচারের মুখোমুখি করব।”

তিনি আরও বলেন ‘সিজারের সাথে আর কারা যুক্ত রয়েছে তদন্তনাধীন মামলার কারণে তাদের নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। সেই আদালতে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে আমি সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএনপি’র উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে অপহরণের পর হত্যার উদ্দেশ্যে সিজারকে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরই অংশ হিসেবে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার প্রদান করে।’

এদিকে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে জাসাস নেতা মামুন ছাড়া আর কারও নাম না থাকলেও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্য নেতারাও এতে জড়িত থাকতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অপহরণের অংশ হিসেবে এফবিআইয়ের এক এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ায় বাংলাদেশি রিজভী আহমেদ সিজার সহ দুজনকে কারাদণ্ড দেয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে রিজভী দাবি করেন, বিএনপির উচ্চপর্যায় থেকে পাওয়া নির্দেশে এফবিআইয়ের একজন এজেন্টকে পাঁচ লাখ ডলার ঘুষের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়ের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

রিজভী স্বীকার করেন, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে জয়ের সম্পর্কে এফবিআইয়ের কাছে থাকা তথ্য পাচার করে দেওয়ার জন্য এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট রবার্ট লাস্টিকের সঙ্গে তাঁরা পাঁচ লাখ ডলারে চুক্তিবদ্ধ হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত