সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ আগস্ট, ২০১৫ ০১:৩২

২০ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত: প্রেস ব্রিফিং বৃহস্পতিবার

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নিয়ে জোটের করণীয় নির্ধারণ করতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় ঐক্যজোটের বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানো হবে বৃহস্পতিবার।

এ লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করা হবে। বুধবার (১২ আগস্ট) রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংবাদ ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।

বৈঠক শেষে জোটের আরেক শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা তিন মাস সংগ্রাম করেছিলাম। এর দীর্ঘ সময় পর আমরা একসঙ্গে বসলাম। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী আমাদের সঙ্গে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনে আছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না গনতন্ত্র ফিরে আসবে, আমরা আমাদের কৌশল অনুযায়ী এগিয়ে যাবো।

এর আগে টানা সাড়ে ৯ মাস পর রাত সাড়ে ৮টায় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পৌনে ২ ঘন্টার এই বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নিবার্চনের বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কর্মকৌশলসহ জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, কারাবন্দি নেতৃবৃন্দের মুক্তিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জোটের অখণ্ডতা বজায় রেখে পর্যায়ক্রমে আন্দোলনের দিকে এগোনোর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন খালেদা জিয়া। জোট নেতাদের তিনি আশ্বস্ত করেন, পরিস্থিতি এখন যাই হোক, সামনে তাদের জন্য ভাল দিন অপেক্ষা করছে। সেই দিনটির জন্য ধৈর্য্য ধরে সবাইকে অপেক্ষ করতে হবে।

জামায়াত প্রশ্নে তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটে জামায়াত আছে, জামায়াত থাকবে। কারো পরামর্শে বা ইন্ধনে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবে না বিএনপি।

বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুল হালিমের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন এত কথা বলছে। তো আপনারা নীরব আছেন কেন? আপনারা কেন বলছেন না, এক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গেও আপনাদের জোট ছিল।

পেট্রলবোমা সম্পর্কে আলোচনা উঠলে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা তো জানেন বাংলাদেশে এই পেট্রল বোমার সংস্কৃতি চালু করেছিল জাসদ। জাসদের কর্মী নিখিলই এই পেট্রোলবোমার জনক। সেই সব ইতিহাস আপনারা জনগণের সামনে তুলে ধরেন না কেন?

বৈঠকে জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির কাজী জাফর আহমদ, এলডিপির অলি আহমেদ, জামায়াতে ইসলাম আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, খেলাফত মজলিশের ড. আহমেদ আবদুল কাদের, এনডিপির খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির ছায়েদুল হাসান ইকবাল, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহম্মেদ, জমিয়তে উলামা ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন মনি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বৈঠকে দলের জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) টিআইএম ফজলে রাব্বী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও ছিলেন।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তিন মাসের টানা আন্দোলনের পর জোট নেতাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের এটিই প্রথম বৈঠক। সর্বশেষ গত ২২ নভেম্বর জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত