সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ জুন, ২০১৯ ০২:০৭

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে যুক্ত হতে পারেন আরও কয়েকজন

তিন বছর আগে কাউন্সিলের পর বিএনপি ১৭ সদস্যের স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করেছিল। সেখানে কিছু পদ শূন্য থাকলেও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে কয়েকজন মারা গেছেন। এতে শূন্যপদের সংখ্যা বেড়েছে। বুধবার দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি পদগুলোও পূরণ করার কথা ভাবছে দলটি। তাতে বিবেচনায় আছেন দলের ছয়জন ভাইস চেয়ারম্যান।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। দুজনেই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন আসছিলেন। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দুই নেতাকে স্থায়ী কমিটিতে যুক্ত করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া দলের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ দুজনকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।

বিএনপি সর্বশেষ ২০১৬ সালের মার্চে কাউন্সিল করে। ওই বছর আগস্ট ১৭ সদস্যের স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। তবে বিএনপিতে স্থায়ী কমিটির পদ রয়েছে ১৯টি। তখন থেকেই দুটি পদ শূন্য রয়েছে। এরপর তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ এবং এম কে আনোয়ার মারা গেলে পাঁচটি পদ শূন্য হয়। তবে বুধবার দুজনকে নিয়োগ দেওয়ায় এখন তিনটি পদ খালি রয়েছে।

বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (পদাধিকারবলে), সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান (পদাধিকারবলে), মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (পদাধিকারবলে), খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার থেকে যুক্ত হয়েছেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, স্থায়ী কমিটির মাহবুবুর রহমান এবং রফিকুল ইসলাম মিয়ার বয়স হয়েছে। তাঁরা হয়তো অবসরে যেতে পারেন। দলে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাঁরা এখন সেভাবে অংশ নিতে পারেন না। তাঁরা এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেননি।

বিএনপির ছয় ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে কয়েকজনকে স্থায়ী কমিটিতে জায়গা দেওয়া হতে পারে বলে জানান বিএনপির এক নেতা। তিনি বলেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মো. শাহজাহান ও আবদুল্লাহ আল নোমানের মধ্যে কয়েকজনের নাম স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে ঘোষণা হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘পদ খালি আছে। পূরণ হওয়া দরকার। শিগগিরই হবে কি না, তা জানি না।’ গতবার কাউন্সিল করার পরে বিএনপি বিভিন্ন কমিটি পুনর্গঠন করে। তবে এবার এখন পর্যন্ত কোনো কাউন্সিল হয়নি। কাউন্সিল করার মতো পরিবেশ দেশে নেই জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘কাউন্সিল করতে গেলে সমাবেশ করতে হবে, জেলায় জেলায় কর্মীদের সংগঠিত করা—কত কাজ। সে কাজগুলো তো বর্তমান পরিবেশ অ্যালাউ করে না। কাউন্সিল করার প্রয়োজনীয়তা আমরাও অনুভব করি। তবে সে পরিবেশ দেশে নেই।’

সপ্তাহের প্রতি শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে বসার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন পর ১৫ জুন শনিবার তাঁরা বৈঠকে বসেন। সেখানে তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। বৈঠকে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকটি মুলতবি ঘোষণা করা হয়।

বিএনপির এক সূত্র জানায়, তারেক রহমান পরবর্তী বৈঠকে নেতাদের ভবিষ্যতে করণীয় ও কর্মসূচি বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নিয়ে আসতে বলেছেন। বিএনপি এখন বৃহত্তর ঐক্য গড়ার কথা ভাবছে। সামনের বৈঠকে বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়। ওই সূত্রে বলা হচ্ছে, ঐক্য গড়তে সম্ভাব্য বাধা কী কী হতে পারে, ঐক্যফ্রন্টকে শক্তিশালী করা, ২০ দল, ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির মধ্যে একটি সমন্বয় কমিটি এবং জামায়াতকে নিয়ে দল কোন অবস্থানে যাবে, সেসব বিষয়ও উঠে আসবে পরবর্তী বৈঠকে।

এ ব্যাপারে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অনেক কিছু নিয়েই আলাপ হবে। সেখানে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে কি না, তা বৈঠকের পর বোঝা যাবে।
সূত্র: প্রথম আলো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত