সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২২:০৬

বিএনপিকে দমিয়ে রাখার কোন ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া হবেনা

সিলেট জেলা বিএনপির আলোচনায় সভায় বক্তারা

বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আইনের শাসন নিশ্চিত করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি সুখী সমৃদ্ধ স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অনেক চড়াই-উৎরাই, নানাবিধ ষড়যন্ত্র ও সীমাহীন জুলুম উপেক্ষা করে আজো বিএনপি তার লক্ষ্যে অটুট আছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদ জিয়া দেশে যে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারার সূচনা করেছিলেন সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তার সুযোগ্য সহধর্মিণী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারান্তরীণ। আওয়ামীলীগ মুখে গণতন্ত্র বললেও তাদের ইতিহাস বাকশাল প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র হত্যার। গণতন্ত্র হত্যায় তাদের ভয়াল থাবা আজও বিদ্যমান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ র‍্যালিতে বাধা দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তাদের হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন। দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া ফরমায়েশি সাজা সহ সকল ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন। জননেতা এম ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলী সহ গুমকৃত সকল নেতাকর্মীদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বৈরাচারী শাসনের পথ পরিহার করে বাকশালী সরকারকে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসতে হবে। স্বৈরাচারী শাসকের পরিণতি কখনো কল্যাণকর হয়নি।

রোববার বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সলের পরিচালনায় নগরীর সোবহানীঘাটস্থ আগ্রা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা সাদিকুর রহমানের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আলহাজ এম. এ হক ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম।

অন্যান্যের মধ্যে রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরী, সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশু, আব্দুল মান্নান, মঈনুল হক চৌধুরী চেয়ারম্যান, কামরুল হুদা জায়গীরদার, আশিক উদ্দিন চৌধুরী, হাজী শাহাব উদ্দিন, আব্দুল হাকিম চৌধুরী, ইকবাল আহমদ চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম ফারুক, উপদেষ্টা মাজহারুল ইসলাম ডালিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী ও মোঃ মঈনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ খান জামাল ও আবুল কাশেম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপি, জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান ফয়েজ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জাসাস সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আহমদ রানু, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সাবেক সহ-সভাপতি লিটন আহমদ, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন নাদিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন, দুলাল রেজা, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোতাকাব্বির চৌধুরী সাকি, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম প্রমুখ।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ এম. এ হক বলেন, আওয়ামীলীগ ও গণতন্ত্র এক সাথে চলার নজির নেই। যখনই তারা ক্ষমতায় গিয়েছে হয়তো বাকশাল করেছে নয় তো গণতন্ত্র হত্যা করেছে। অথচ বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে আসছে। ভোট চুরি করে, বন্দুকের নলের জোরে ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু মানুষের ভালবাসা পাওয়া যায়না। বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। গণমানুষের প্রিয় এই দলকে দমিয়ে রাখার সাধ্য কারো নেই। বিএনপি ছিল আছে এবং থাকবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। দেশনায়ক তারেক রহমান আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের কাণ্ডারি। তাই তো বাকশালী ফ্যাসিস্ট সরকার বিএনপি এবং শহীদ জিয়ার পরিবারকে ভয় পায়। ভয়কে জয় করে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বিএনপি দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে চলছে। বিএনপির অগ্রযাত্রা রুখে দাঁড়ানোর সাধ্য কারো নাই। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অপশক্তির হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিএনপি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবে। এর কারণ একটাই বিএনপির রাজনীতি ক্ষমতার নয় মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। শহীদ জিয়ার ১৯দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জিয়ার সৈনিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, আওয়ামীলীগের মুখে উন্নয়নের বুলি থাকলেও আড়ালে দুর্নীতি আর লুটপাটের মহোৎসব। দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের পছন্দ করেনা। তাই তারা ভোটে পারবেনা জেনে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণ তাদের ভোট দেয়নি বিধায় প্রতিশোধ হিসেবে জনগণের উপর ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি করেছে। দেশে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে বিরোধী মত দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সবকিছুরই একটা শেষ আছে। আওয়ামী স্বৈরাচারী শক্তিকেও বিদায় নিতে হবে। সময়ের ব্যবধানে তারা ইতিহাসের আস্থাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন, একাধিকবার সফলভাবে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিএনপির মতো একটি দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‍্যালিতে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা কোনভাবে কাম্য হতে পারেনা। এর মাধ্যমে আওয়ামীলীগের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বিএনপি যে গণতন্ত্রের পথে আছে সেটাও প্রমাণিত হয়েছে। এমন সময় আমাদের দল ৪১বছরে পদার্পণ করেছে যে সময় আমাদের মায়ের মতো নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ফরমায়েশি রায়ে কারান্তরীণ। আন্দোলন ছাড়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ বাকশালী সরকার খোলা রাখেনি। তাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে শহীদ জিয়ার সৈনিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের দৃঢ় শপথ নিতে হবে। ভুলে গেলে চলবেনা শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম সর্ববৃহৎ দলটির নাম হচ্ছে বিএনপি। এই বিএনপিকে দমিয়ে রাখার কোন ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া হবেনা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত