নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৫৫

আমার কোনো গ্রুপ নেই, কাজেই তার প্রমাণ দেবো: নাসির উদ্দিন

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। জ্যেষ্ঠ অনেক প্রার্থীকে টপকে সাধারণ সম্পাদক হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ এই নেতা। এরআগে সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন নাসির উদ্দিন।

সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরের সাথে কথা বলেছেন নাসির উদ্দিন খান। দলে নিজের নামে গ্রুপ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সিলেট আওয়ামী লীগে একটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করেন, এমন কথা চালু রয়েছে- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন খান বলেন, এটি ভুল কথা। এটি আমার নামে অপপ্রচার। আমি কোনো গ্রুপিং করি না। আমি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তাই ছাত্রলীগের কেউ কেউ আমার অনুসারী হতে পারে। তবে কোনো গ্রুপ নেই।

তিনি বলেন, আমি ছাত্ররাজনীতি ছেড়েছি ২০ বছর আগে। ছাত্রলীগের কর্মসূচিগুলোতেও যাই না। এখন আমি গণরাজনীতি করি। আমি এখন সবার সাধারণ সম্পাদক। সবার নেতা। আমার দরজা সকলের জন্য খোলা। সবাইকে নিয়েই কাজ করবো। আপনারা দেখবেন, কাজের মাধ্যমেই আমি তা প্রমাণ করবো।

নাসির উদ্দিন বলেন, আমি সিলেট চেম্বারের গত নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম। তখন আপনারা দেখেছেন, নানা চাপ সত্ত্বেও আমি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও একইরকম নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবো। আমি সিলেটের কয়েকটি উপজেলার গত কাউন্সিলের দায়িত্বে ছিলাম। কোথাও কিন্তু আমি কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করিনি। সব নিরপেক্ষভাবে করেছি।

নাসির খান বলেন, কিছুদিন আগেই সিলেটে যুবলীগের সম্মেলন হয়েছে। কাউন্সিলে আমার পছন্দের প্রার্থী থাকতেই পারেন। কাউন্সিলে আমার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারিনি। কিন্তু আপনারা দেখেছেন, পরদিনই আমি জেলা যুবলীগের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি। ফলে আমি গ্রুপিং করি এটি অনুমান নির্ভর কথা। যারা আমাকে পছন্দ করে না তারাই এমনটি বলে।

তবে তিনি বলেন, বিগত দিনে আমার কোনো কর্মকাণ্ডে হয়তো কারো কারো ধারণা হতে পারে আমি একটি বলয় নিয়ন্ত্রণ করি। তবে আগামীতে কেউ এমন ধারণা করারও সুযোগ পাবেন না। এরকম ধারণা হতে পারে, এমন কার্যক্রম থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নেবো। কারণ আমার চেয়ারটা নিরপেক্ষ চেয়ার।

নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা আমার উপর যে আস্থা রেখেছেন আমি তার মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করবো।

জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ে নিজের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামনেই আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন। ডিসেম্বর মাস এই সম্মেলন নিয়েই চলে যাবে। জানুয়ারির দিকে আমাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে। এরপর যেসব উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই সেসব জায়গায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো। তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড আরও বেগবান করতে কাজ করবো। সংগঠনের কিছুকিছু ক্ষেত্রে অগোছালো ভাব রয়েছে সেগুলো গুছিয়ে আনতে উদ্যোগ নেবো। এছাড়া সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তৃণমূলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবো।

পেশায় আইনজীবী এই নেতা বলেন, আগামী বছরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালিত হবে। যা মুজিববর্ষ নামে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আর পরের বছর আমাদের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী। এই দুটি বিশেষ উপলক্ষ পুরো জেলায় ঝাকজমকভাবে পালন করাই আমাদের কমিটির বড় চ্যালেঞ্জ। আশা করছি, এগুলো আমরা ভালোভাবে করতে পারবো।

দলের স্থায়ী কার্যালয় না থাকা প্রসঙ্গে নাসির উদ্দিন খান বলেন, এ নিয়ে বারবার প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এতোদিনে একটি স্থায়ী কার্যালয় না হওয়া অবশ্যই আগের কমিটিগুলোর ব্যর্থতা। এ নিয়ে আমার পরিকল্পনা রয়েছে। মহানগর কমিটির সাথে মিলে আমরা সিলেটে আওয়ামী লীগের স্থায়ী একটি কার্যালয় করবো। তবে একটু সময় লাগবে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হন যথাক্রমে লুৎফুর রহমান ও নাসির উদ্দিন খান। নাসির উদ্দিন গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত