সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ১৭:৪৮

‘সরকারের আচরণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থি’

ডেইলি স্টার বন্ধ এবং এর সম্পাদক মাহফুজ আনামকে গ্রেফতারের দাবীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের প্রতি সরকারী দলের সদস্যদের অব্যাহত আক্রমণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গণি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, অব্যাহতভাবে ডেইলি স্টার বন্ধ, সম্পাদক মাহফুজ আনামকে গ্রেফতার ও তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন মামলা দায়ের স্বাধীন গণমাধ্যম নীতির পরিপন্থি। সরকারী দলের নেতাদের এই ধরনের আচরণ রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম কারো জন্যই শুভ লঙ্ঘন নয়।

নেতৃদ্বয় বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বললেও প্রকৃত অর্থে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই গণমাধ্যম সরকারের প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী সরকার ৪টি সংবাদপত্র রেখে মজলুম জননেতা মওলানা প্রতিষ্ঠিত ‘হক কথা’-সহ সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। অবজাভার সম্পাদক আবদুস সালামকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করা হয়েছিল। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দৈনিক বাংলা, টাইমস, বিচিত্রা, আনন্দ বিচিত্রা বন্ধ করে শত শত সাংবাদিককে বেকারে পরিণত করেছে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে বন্ধ করেছে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, দৈনিক আমার দেশ। শুধু বন্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি রেখেছে। গ্রেফতার করেছে ইটিভি ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালামকে। সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়েছে কারাগারে। জাতীয় সংসদে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। এখন ডেইলি স্টার বন্ধ, এর সম্পাদক মাহফুজ আনামকে গ্রেফতারের দাবী ও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন স্থানে হয়রানীমূলক মামলা দায়ের - যা সকল কিছুই মুক্ত গণমাধ্যম নীতির পরিপন্থি।

নেতৃদ্বয় আলো বলেন, সরকার বিরোধী সংবাদ পরিবেশনের কারণে এই সরকারের আমলে  টিভি চ্যানেল, বন্ধ হয়েছে, সম্পাদক-পরিচালক কারাবন্দি, জাতীয় সংসদে দারিয়ে সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সরকারী দলের সিনিয়র সদস্যদের চরম সমালোচনার শিকার হয়েছে সংবাদপত্র, সম্পাদক ও সাংবাদিকরা। সাংবাদিক সাগর-রুনির নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনেও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বর্তমান সরকার। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফলে গণতন্ত্র বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে, এমনকি ভবিষ্যতে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার আশংকায় রয়েছে দেশবাসী।

নেতৃদ্বয় অবিলম্বে সরকারকে এই ধরনের আচরণ বন্ধ করে বন্ধি মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদকে মুক্তি এবং বন্ধ গণমাধ্যম গুলোকে খুলে দেবার জোর দাবী জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না, তেমনই মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না। বর্তমানে দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সংকোচিত হয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। যা একটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত