কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৪ আগস্ট, ২০১৯ ১৯:২৯

শমশেরনগর চা বাগান এলাকাকে মাদকমুক্ত ঘোষণায় র‌্যালি-সমাবেশ

নেশায় বিপর্যস্ত করে ফেলা চা বাগান এলাকাকে মাদক মুক্ত ঘোষণা করায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে জাগরণ যুব ফোরামের আয়োজনে প্রথম বারের মতো বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও কয়েকটি পথসভা শেষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১ টায় চা বাগান থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শমশেরনগর বাজার প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাগরণ যুব ফোরামের আয়োজনে মাদক বিরোধী শোভাযাত্রা ও সমাবেশের মূলে ছিল চা শ্রমিক, ছাত্র ও যুবকরা।

জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাসের সভাপতিত্বে ও বাবুল মাদ্রাজির সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ, ইউপি সদস্য ইয়াকুব মিয়া, মাসিক চা মজদুর সম্পাদক সীতারাম বিণ, শমশেরনগর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু গোপাল, সুজন লোহার, আপন বাউরী, মনি শংকর রায়  ও নারী নেত্রী আশা আরনাল প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, চা শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থে যাতে কোন কাজে না লাগে, শ্রমিকরা যাতে উন্নত না হতে পারে, এই শ্রমিকরা সারাজীবন যাতে চা বাগানের দাসত্বের গণ্ডির বেড়াজালে আটকে থাকতে পারে সেজন্য ব্রিটিশদের আমল থেকে মদের ব্যবস্থা চালু করা  হয়েছিল। সেটি এখন পর্যন্ত চা বাগানে প্রচলিত আছে। চা বাগানের লেবার লাইনের মধ্যে অবৈধভাবে নিজস্ব পদ্ধতিতে উৎপাদিত হচ্ছে মাদক। অবাধে গড়ে উঠা মদের পাট্টায় তৈরি হওয়া মদের মধ্যে ‘চোলাই’ ও ‘হাড়িয়া’ মদ নামে পরিচিত। চা বাগানে এসব মদ মদ পান করে নেশাগ্রস্ত ও মাথাল হয়ে পরিবার, সংসারে ঝগড়া ঝাটি করে ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করে বিপর্যস্ত করে তোলে। বর্তমানে চা বাগানে মাদকাসক্ত বস্তি একটি অংশও সম্পৃক্ত হচ্ছেন। চা বাগান শ্রমিকরা বলেন, বাগানে যারা মদ পান করে তারা প্রতি রাতে উপার্জিত সব টাকা দিয়ে মদ কিনে খায়। এরপর মাতাল হয়ে ঝগড়াঝাঁটি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

এছাড়াও এসব মদ পান করে যুব সমাজ ধ্বংস, মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত, পরিবেশ বিনষ্ট, শারীরিকভাবে সমস্যাসহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে চা বাগান সমূহে অবৈধভাবে মদের পাট্টা সমূহ বন্ধ করে অবিলম্বে মাদক মুক্ত চা বাগান ঘোষণার জন্য সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে বক্তারা দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন চা বাগান সমূহে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত হয়ে আসা মাদকের যে বেচা কেনা ছিল তা এখনও অব্যাহত আছে। সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যা হলেই মাদক সেবন করে মাতাল শ্রমিকরা পরিবারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে ঝগড়াঝাঁটি, হানাহানি, ভাঙচুর সহ নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ফলে আর্থিক  ও শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও পরিবার সদস্যদেরকে বিপর্যস্ত করে ফেলছে চা বাগানের মাদকাসক্ত পুরুষরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত