সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২০:২২

মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজে শোক দিবস পালন হয়নি

সিলেট নগরীর শামীমাবাদস্থ এমপিওভুক্ত মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ গত ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেনি। বিষয়টি জানাজানির পর সাজানো একটি কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত করছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের প্রভাষক (আপিলকারী) মো. মাহবুবুর রউফ।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি।

মাহবুবুর রউফ আরো অভিযোগ করেন, কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে গিয়াস তাকে প্রভাষক পদ থেকে বরখাস্ত করেন। তবে বিষয়টি এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুর রউফ বলেন, ‘১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির সবচেয়ে শোকের দিন। দিনটি বাংলাদেশে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এ দিবসে বাধ্যতামূলকভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মসূচি পালন করতে হয়। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়নি। এমনকি শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে কমিটি গঠন কিংবা প্রস্তুতি সভাও হয়নি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত দিবসে কোনোও কর্মসূচি পালন না করার ঘটনা আমাকে এবং আমার কয়েকজন সহকর্মীকে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে। আমি ও আমার কয়েকজন সহকর্মী বিষয়টি কয়েকজন সাংবাদিক ভাইকে অবহিত করি। এরপর ‘শোক দিবস পালন করেনি মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ’ শীর্ষক সংবাদ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘কলেজে শোক দিবস পালন না করার সংবাদে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন সুলতানা এ বিষয়টি তদন্তের জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজকে লিখিত নির্দেশ দেন। তিনি গত ৫ সেপ্টেম্বর কলেজে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেন। তবে এখনও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

এদিকে কলেজে শোক দিবসের কর্মসূচি পালন না হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হলে বিপাকে পড়েন কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি গত ১৮ আগস্ট তড়িগড়ি করে একটি ব্যানার বানিয়ে ৩/৪ জন জুনিয়র শিক্ষককে ডেকে এনে ভুয়া ও সাজানো কর্মসূচি পালন করেন। ওই কর্মসূচিতে কলেজের বাকি প্রায় ৫০ জন শিক্ষকই অনুপস্থিত ছিলেন। মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়নি এবং ১৮ই আগস্ট যে সাজানো ও ভুয়া কর্মসূচি পালন করা হয়, তা কলেজের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং ওই সাজানো কর্মসূচিতে মোবাইল ফোনে তোলা ছবি পরীক্ষা করলেই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে।

ওই সাজানো ও ভুয়া কর্মসূচিতে কলেজে সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দসহ সিংহভাগ শিক্ষক এবং কোনো শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন না, তাও খোঁজ নিলে বেরিয়ে আসবে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিয়মান হয়, অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন নিজের আত্মরক্ষার্থে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর কর্মসূচি নিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। এটি বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও অবজ্ঞার শামিল।’

মূলত শোক দিবসের কর্মসূচি পালন না করার তথ্য সংবাদমাধ্যমকে দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ৭ সেপ্টেম্বর আমাকে বরখাস্তের বিষয়ে সংবাদবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন অধ্যক্ষ, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অনৈতিক। । মাহবুবুর রউফ এসব বিষয়ে প্রশাসনকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহবান জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত