স্পোর্টস ডেস্ক

০৯ নভেম্বর, ২০১৫ ১১:৪৭

বার্সার জয়ের রাতে রিয়ালের বিষাদ

বার্সা পারলেও পারেনি চিরপ্রতিদ্বন্দী রিয়াল মাদ্রিদ। রোববার রাতে মেসিবিহীন বার্সা যখন দারুন এক জয় উদযাপন করছিলো, তখন রোনালদো-বেলের শক্তিশালী রিয়ালকে নিতে হয়েছে পরাজয়ের স্বাদ।  রোববার রাতে সেভিয়ার মাঠ থেকে ৩-২ গোলে হেরে ফিরেছে রাফায়েল বেনিতেসের দল।

ঘরের মাঠে লিগের আগের তিন ম্যাচেই জেতা সেভিয়া প্রথম আধ ঘণ্টা পরই খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তবে শুরুটা ভালো করেছিল রিয়াল। দশম মিনিটে পেপের লম্বা পাস ডি-বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নিয়েছিলেন রোনালদো। বল প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লাগায় লক্ষ্যে পৌঁছেনি।

খানিক বাদে ফের হতাশায় পুড়তে হয় রিয়ালকে। গত বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির বিপক্ষে জয়ের নায়ক নাচোর ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট পোস্টে লাগে।

গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি রিয়ালকে। ২২তম মিনিটে দর্শনীয় গোলে অতিথিদের এগিয়ে দেন সের্হিও রামোস। কর্নার থেকে ওভারহেড কিকে গোলটি করার পর অবশ্য উদযাপন করতে পারেননি এই ডিফেন্ডার। মাটিতে পড়ে কাঁধে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। কিছুক্ষণ পর মাঠে ফিরলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি, অস্বস্তিবোধ করতে থাকায় ৩১তম মিনিটে তাকে তুলে নিয়ে রাফায়েল ভারানেকে নামান কোচ।

এগিয়ে যাওয়ার দুই মিনিট পর বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল শট নিয়েছিলেন চোট কাটিয়ে দলে ফেরা গ্যারেথ বেল। গোলরক্ষকের তা ঠেকাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি। খানিক বাদে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে আবার গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেন ওয়েলসের এই ফরোয়ার্ড।

সেভিয়ার সমতায় ফিরতে বেশি সময় লাগেনি। ৩৬তম মিনিটে কর্নার থেকে গোল করে স্বাগতিক সমর্থকদের আনন্দে ভাসান চিরো ইম্মোবিলে। রামোসের গোলের মতো এটিও দর্শনীয়, প্রায় গোল লাইনের কাছে বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে জালে জড়ান ইতালির এই স্ট্রাইকার।

জার্সি খুলে গোলটি উদযাপন করায় জন্য অবশ্য হলুদ কার্ড দেখতে হয় তাকে।

সমতায় ফেরার আত্মবিশ্বাসে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সেভিয়া। খেলার চিত্রও যায় পাল্টে, রিয়ালের রক্ষণে ক্রমেই চাপ বাড়াতে থাকে স্বাগতিকরা। চার মিনিট পরই দলকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ইম্মোবিলে, কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও একটি ক্রসে ঠিকমতো পা লাগাতে পারেননি তিনি।

প্রথমার্ধের শেষের মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও উজ্জীবিত খেলা খেলে সেভিয়া। বিরতির পর প্রথম বড় সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

৬০তম মিনিটে বল নিয়ে ডি-বক্সের বাঁ পাশে ঢুকে পড়ে নিচু ক্রস দেন ইউক্রেনের উইঙ্গার ইয়েভেন কোনোপ্লিয়াঙ্কা। ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে নিখুঁত শটে তা জালে পাঠিয়ে দেন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার এভার বানেগা।
এর তিন মিনিট পর ইসকোকে বসিয়ে চোট কাটিয়ে ফেরা হামেস রদ্রিগেসকে মাঠে নামান বেনিতেস।

৭৩তম মিনিটে টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান সেভিয়া গোলরক্ষক সের্হিও রিকো। কর্নার থেকে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার কাসামিরোর হেড এক হাতে ঠেকিয়ে আবারও সেভিয়ার ত্রাতা তিনি।

৭৪তম মিনিটে সেভিয়ার জয় অনেকটা নিশ্চিত করেন ফের্নান্দো লরেন্তে। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মারিয়ানোর ক্রসে কোনো বাধা ছাড়াই হেডে বল জালে জড়ান স্পেনের এই ফরোয়ার্ড। এত সহজ হেড করার সুযোগ ক্যারিয়ারে বোধহয় খুব কমই পেয়েছেন তিনি।

৭৭তম মিনিটে চতুর্থ গোলটি প্রায় পেয়েই গিয়েছিল সেভিয়া। কোনোপ্লিয়াঙ্কা শট সেবার কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান কিকো কাসিয়া।

যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দূর পাল্লার দারুণ গড়ানো শটে ডান পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান হামেস। তাতে ব্যবধান কমলেও নাটকীয়তা আসেনি। কারণ এর পর খেলা চালানোর জন্য আর সময় ছিল না রেফারির ঘড়িতে।

এই ম্যাচের আগেই ভিয়ারিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষে উঠে গিয়েছিল বার্সেলোনা। ১১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৭। রিয়াল মাদ্রিদ জিততে না পারায় সেখানেই থাকছে লুইস এনরিকের দল।

লা লিগার এই মৌসুমে প্রথম হারে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হচ্ছে রিয়ালকে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে উঠে এসেছে সেভিয়া।

অন্য ম্যাচে স্পোর্তিং গিহনকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত