নিউজ ডেস্ক

০৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ০২:২৪

বঙ্গবন্ধু কাপ: বাংলাদেশ-থাইল্যাণ্ড সেমিফাইনাল আজ

জিততে চায় দুই দলই। শতভাগ উজাড় করে দিয়ে দেশবাসীর মুখে হাসি ফুটাতে চান মামুনুল-হেমন্তরা

সিঙ্গাপুরকে ৩-২ ও বাহরাইনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে তবেই সেমিফাইনালে উঠেছে থাইল্যাণ্ড। আর মালয়েশিয়ার বিপক্ষে হেরে পরের ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারিয়ে সেমিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ। একই সাথে টুর্ণামেন্ট শুরুর আগের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছে তারা। এবার লক্ষ্য ফাইনাল!

ফাইনালে যেতে হলে শক্তিশালী থাইল্যাণ্ডকে হারাতেই হবে। প্রস্তুত বাংলাদেশ দল, স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা নিয়ে এবং সেরা খেলাটা খেলেই নিশ্চিত করতে চায় ফাইনাল। দলটাও বেশ ফুরফুরে মেজাজে।

ফিফা স্বীকৃত, টুর্নামেন্ট ও প্রদর্শনী মিলিয়ে ২১ ম্যাচে জয় পাঁচটিতে, ড্র ছয়টি। ২০১২ সালের নভেম্বরে শেষ প্রীতি ম্যাচে হার ০-৫ গোলে। এমন দলের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ফুরফুরে বাংলাদেশ। ডাচ কোচ লুডভিক ডি ক্রুইফ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শিষ দিতে দিতে ঢুকে যেন প্রতীক হলেন। কেনর জবাব দিলেন লাল-সবুজ অধিনায়ক মামুনুল, 'প্রতিশ্রুত সেমিফাইনাল খেলছি; ফাইনাল অসম্ভব নয়।' বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ এশিয়ার যুদ্ধবাজ হাতি থাইল্যান্ডকে হারাতে মরিয়া বাংলার বাঘ। ক্রুইফ শিষ্যরা সামর্থ্যের ১১০ ভাগ দিতে প্রস্তুত। থাই কোচ চকতাই পোমার্ট ছেলেদের কাছে শতভাগ চেয়ে দিলেন প্রতিন্দন্দ্বিতার গন্ধ।

১৯৮৫ সালের বিশ্বকাপ বাছাই থেকে ১৯৯১'র অলিম্পিক প্রাক-বাছাই পর্যন্ত সমানতালে ছিল বাংলাদেশ। ১০ ম্যাচের তিনটি করে জয় ও হার, ড্র বাকি চারটি। পরের ২ বছর ৩ ম্যাচেই হার। এখান থেকেই দুই দেশের দূরত্ব শুরু। প্রতিপক্ষ অলিম্পিক দল হওয়ায় মামুনুল-এমিলিদের জয়ের স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়? শিষ্যদের ওপর আত্মবিশ্বাস থাকলেও শক্তিতে থাইকে এগিয়ে রাখলেন ক্রুইফ। তাদের হারিয়ে ফাইনাল খেলার প্রতিও আশাবাদী। ডাচ কোচ জানান, 'টুর্নামেন্ট শুরুতে বাহরাইনকে ফেভারিট বলা হলেও গত দুই ম্যাচ দেখার পর মনে হয়েছে ভারসাম্যপূর্ণ দল বলতে যা বোঝায়, থাইল্যান্ড তা-ই। কোনো বিভাগে ঘাটতি নেই। এরই মধ্যে তারা সামর্থ্যের প্রমাণও দিয়েছে। এরপরও তাদের হারানোর মতো কঠিন কাজটি করতে চাই আমরা।'

স্বাগতিকদের তিন মিডফিল্ডার মামুনুল, জামাল ভূইয়া ও হেমন্ত ভিনসেন্টের খেলা ভালো লেগেছে থাই কোচের। তিনজনই ভালো ফুটবলার, যে কোনো দলের জন্য বিপজ্জনক। তারা ম্যাচের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠতে পারে বলে জানান চকতাই পোমার্ট। স্বাগতিকদের এগিয়ে রাখার কৌশল নিয়েছেন থাই কোচ। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ঘরের মাঠে জাতীয় দল নিয়ে খেলায় সুবিধা পাবে। আমাদের দল অনূর্ধ্ব-২৩। স্বাগতিকরা জাতীয় দল নিয়ে খেলায় স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে। সমর্থকরাও ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারেন। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ জিততে চাই।'

শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে অলিম্পিক বাছাইয়ের প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সারতে চায় তার দল। থাই কোচের কৌশলী আচরণ স্বাভাবিক দেখছেন মামুনুল। প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের নিয়ে বেশি ভাবনা লাল-সবুজ অধিনায়কের। তিনি জানান, 'অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে এসেছে বলে তারা এমন কথা বলছে। কিন্তু তারা হয়তো জানে না, আমাদের দলের ১২ ফুটবলারের বয়স ২১ বছরের নিচে। তাদের বেশিরভাগই প্রথম একাদশে খেলছে।' তবে এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না মামুনুল। তার দলের একটাই চাওয়া, 'নিজেদের সেরাটা খেলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া।

সেমিফাইনালে উঠে সালাউদ্দিন ভাইয়ের (বাফুফে সভাপতি) প্রতিশ্রুতি রেখেছি। এখন চাই- দেশবাসীকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ফাইনালে উঠতে। এর বাইরে আমাদের আর কোনো চিন্তা নেই।

জয়ের জন্য মরিয়া ডাচ কোচ ক্রুইফ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ী একাদশ খেলাবেন শুরু থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে এমিলির পরিবর্তে স্ট্রাইকার শাখাওয়াত রনির খেলার সম্ভাবনা বেশি। ৯০ মিনিটে ম্যাচ বের করার লক্ষ্য থাকলেও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে টাইব্রেকারেরও। গোটা দেশবাসীর প্রত্যাশা যেভাবেই হোক, জয়টা যেন আসে।

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত