স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ মার্চ, ২০১৬ ১৯:২৬

চমক দেখিয়েও ইংল্যান্ডের কাছে হারলো আফগানিস্তান

সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে খেলতে এসে প্রতি ম্যাচেই সামর্থের পরিচয় দিচ্ছে আফগানিস্তান।
বুধবার দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে  ইংলিশদের চমকে দিলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি আফগানিস্তান, ১৫ রানে হেরে বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে।

প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৪২ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য আফগানদের সামনে ১৪৩ রানের টার্গেট ছুড়ে দেয় তারা। জবাবে ২০ ওভার খেললেও ৯ উইকেটে আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ১২৭ রানে।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানদের প্রাথমিক দিকটা ভালো ছিল না। দলের স্কোরশিটে মাত্র ১৩ রান যোগ হতেই নেই তিন উইকেট। একে একে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ শেহজাদ (৪), আসগর স্টানিকজাই (১), গুলবাদিন নায়েব (০)। এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেন আফগান ওপেনার নুর আলী জাদরান। কিন্তু আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে তিনিও ১৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন।

বল হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখানো মোহাম্মদ নবী চেয়েছিলেন উইকেটে থিতু হতে। আফগানিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ককে সেটা করতে দিলেন ওই রশিদ। ব্যক্তিগত ১২ রানেই নবীকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ইংলিশ এই স্পিনার। রশিদ খানের ১৫, সামিউল্লাহ শেনওয়ারির ২২ এবং নাজিবুল্লাহ জাদরানের ১৪ আফগানদের লড়াইয়ে ফেরায়।

এ ছাড়া শফিকুল্লাহর অপরাজিত ৩৫ রান তো এশিয়ান এই দলটিকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু যোগ্য সঙ্গী না পাওয়ায় জয়ের সেই স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হয় আফগানিস্তানকে। জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়ে আসগর বাহিনী। ইংল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন আদিল রশিদ ও উইলি। একটি করে উইকেট দখলে নেন ক্রিস জর্ডান, মঈন আলী ও বেন স্টোকস।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো দুর্দশা ছিল ইংল্যান্ড শিবিরে। ৫৭ রান তুলতেই ইংল্যান্ডের নেই ছয়টি উইকেট, ওভার তখন ৯.২। ৮৫ রানে পড়ে সপ্তম উইকেট। শঙ্কা জেগেছিল ১০০ রানের মধ্যেই গুটিয়ে না যায় ইয়ান মরগানের দল। তবে তা হতে দেননি মঈন আলী। শেষের দিকে ৩৩ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস স্বস্তি দিয়েছে গোটা ইংলিশ শিবিরে। সঙ্গে উইলের ১৭ বলে ২০ রানের ইনিংস। সব মিলিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করতে পেরেছে ইংল্যান্ড।

এদিকে পাওয়ার প্লে ভালোই কেটে যাচ্ছিল ইংল্যান্ডের। রানের গতিও ছিল আশা-জাগানিয়া। কিন্তু পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোহাম্মদ নবী ইংলিশদের ব্যাটিং লাইন বিধ্বস্ত করে দেন। এক ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। হ্যাটট্রিক সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও রানআউট করেছেন একটি।

দলীয় ১৬ রানের মাথায় আমির হামজা ইংলিশ ওপেনার জ্যাসন রয়কে (৫) বোল্ড করেন। তবে জেমস ভিন্স মারমুখী ব্যাটিং করেন। সঙ্গী ছিলেন জো রুট। ষষ্ঠ ওভারে বল করতে আসেন মোহাম্মদ নবী। তৃতীয় বলে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে বিদায় করে দেন ভিন্সকে (১৮ বলে ২২ রান)। পরের বলে বোল্ড হন ইয়ান মরগান (০)। বেন স্টোকস মোহাম্মদ নবীকে হ্যাটট্রিক করতে দেননি। কিন্তু ওভারের শেষ বলে জো রুটকে (৮ বলে ১২) রানআউট করেন এই বোলার। ৪২ রানে ইংল্যান্ডের নেই চারটি উইকেট।

এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে হাল ধরতে পারেননি স্টোকস ও বাটলারও। ৮ বলে সাত রান করে রশিদ খানের বলে বোল্ড বেন স্টোকস। কিছুক্ষণ পর ১০ বলে ৬ রান করে সামিউল্লাহর বলে মোহাম্মদ নবীর হাতে ধরা পরেন বাটলার।  এরপরই মঈন আলীর আবির্ভাব। সপ্তম উইকেটে ক্রিস জর্ডানের সঙ্গে তোলেন ২৮ রান। ১৮ বলে ১৫ রান করে জর্ডান রশিদ খানের হাতে ধরা পড়লেও মঈন আলী ব্যাট হাতে ছিলেন অবিচল।

শেষ পর্যন্ত উইলিকে সঙ্গে নিয়ে মঈন আলী ব্যাটিং করেছেন ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত। অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা করেন ৫৭ রান, মাত্র ৩৩ বলে। ৩৩ বলে ৪১ রানের ইনিংসে মঈন আলী হাঁকিয়েছেন চারটি চার ও একটি ছক্কা। ১৭ বলে দুই ছয়ে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন ডেভিড উইলে। পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ নবী ও রশীদ খান দুটি, আমির হামজা ও সামিউল্লাহ একটি করে উইকেট লাভ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত