সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

০৯ মে, ২০১৫ ০০:২৮

ঢাকা টেস্ট : নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান, তবু হাল ছাড়তে রাজি নন সাকিব

প্রথম ইনিংসে ৮৯ রান করার পথে সাকিবের একটি শট

ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনের চিত্র শেষে চালকের আসনে কেবল নয়, বলা যায় জয়ের বন্দরেই এক পা রেখে বসে আছে পাকিস্তান। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসও বলছে তা কিন্তু গৌরবময় অনিশ্চয়তার নাম যখন ক্রিকেট তখন আপনাকে একটু নড়েচড়ে বসতেই হয়।

ইতিহাস, রেকর্ড সবকিছু যেখানে পাকিস্তানের অনুকূলে তখন স্রোতের বিপরিতে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাসী কথা বলেই গেলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বললেন হাল ছেড়ে না দিয়ে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন।

হঠাত করে বাংলাদেশ কীভাবে এত আত্মবিশ্বাসী হয়! পাকিস্তানের এ সফরে এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি তারা, তিন ওয়ানডেতে বাংলাওয়াশ, একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও হার, এমনকি একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও বিসিবি একাদশের বিপক্ষে হেরেছে তারা। আর সবচেয়ে বড় আত্মবিশ্বাসের জায়গা খুলনা টেস্ট, যেখানে প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকেও বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাড়িয়েছিল দুর্দান্তভাবে; ম্যাচ হয়েছিল ড্র।

৫৫০ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শুক্রবারের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৬৩ রান। ম্যাচ বাঁচাতে পুরো দুটি দিন কাটাতে হবে স্বাগতিকদের। অথবা আরও ৪৮৭ রান করে রিশ্বরেকর্ড গড়ে ম্যাচটি জিততে হবে।

কাজটা ভীষণ কঠিন হবে জানিয়ে সাকিব বলেন, “অনেক রান, সঙ্গে অনেক সময়। দুই দিকেই কঠিন। উইকেটটাও খুলনার মতো না। (মিরপুরের উইকেটে) অনেক পরিবর্তন আসছে, বল উঠছে-নামছে।”

টেস্টে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল তারা।

খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ম্যাচ বাঁচায় বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের দ্বিশতক ও ইমরুল কায়েসের শতকে ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান করে স্বাগতিকরা। সাকিব মনে করেন, সেই ইনিংস থেকেই আত্মবিশ্বাস নিতে পারেন তারা।

“আমরা আমাদের শেষ ম্যাচ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারি। ওইরকম যদি কিছু হয়, কে জানে…। বিশেষ করে প্রথম তিন-চার ব্যাটম্যানের মধ্যে একটা দেড়শ’ বা দুইশ’ রানের জুটি হয়; তাহলে আমার মনে হয়, আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।”

সাকিব জানান, যে যার সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করবে। একজন একশ’, কেউ দুইশ’ যদি করতে পারে, এটা তার নিজের এবং দলের জন্যও অনেক ভালো হবে। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং করেছি। খুব ভালোভাবে সময়টা পার করেছি।

সাকিব মনে করেন, শুক্রবার তিন-চার উইকেট হারালে ম্যাচ তৃতীয় দিনই শেষ হয়ে যেত। চতুর্থ দিন বাকি আনুষ্ঠানিকতাটুকু সেরে নিত পাকিস্তান। কিন্তু মাত্র এক উইকেট হারানোয় এখনও আশা ছাড়েননি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

“তামিম থিতু হয়ে গেছে, মুমিনুল (হক) ভালো শুরু করেছে। কালকের প্রথম ঘণ্টাটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি বিনা উইকেটে আমরা সেই সময়টা কাটিয়ে দিতে পারি, তাহলে ভালো কিছুর আশা আমরা করতেই পারি।”

এদিকে, সতর্ক পাকিস্তান দলও। ঢাকা টেস্ট জিততে পাকিস্তানের দরকার আর ৯ উইকেট। অন্যদিকে বাংলাদেশকে জিততে হলে গড়তে হবে বিশ্বরেকর্ড। এই টেস্টের লাগাম তাই পাকিস্তানের হাতে। তবে দলটির স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ এখনই সম্ভাব্য জয়ের আনন্দে ভেসে যেতে চান না।

জানালেন- আমরা ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু আমাদের এখনো ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে এবং খুবই পেশাদার হতে হবে। চতুর্থ দিনের শুরুতে দ্রুত উইকেট পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নামবেন তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
পাকিস্তান (১ম ইনিংস) ৫৫৭/৮ (ডিক্লেয়ার), আজহার-২২৬, ইউনিস-১৪৮, আসাদ-১০৭
বাংলাদেশ (১ম ইনিংস) ২০৩/৯, সাকিব-৮৯* [ইনজুরির কারণে ব্যাট করতে পারেননি শাহাদাৎ]
পাকিস্তান (২য় ইনিংস) ১৯৫/৬ (ডিক্লেয়ার), মিসবাহ-৮২
বাংলাদেশ (২য় ইনিংস) ৬৩/১ তামিম-৩২* মমিনুল-১৫*, ইমরুল-১৬

আপনার মন্তব্য

আলোচিত