বড়লেখা প্রতিনিধি

১৭ জুলাই, ২০১৮ ২০:৫৯

বড়লেখায় চেতনানাশকে অজ্ঞান দুই পরিবারের ১১জন

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় খাবারের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে দুটি পরিবারের শিশুসহ ১১ সদস্যকে অজ্ঞান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে একটি বাসা থেকে তিনটি মুঠোফোন, আড়াই ভরি সোনা ও নগদ ১০ হাজার টাকার মতো নিয়ে গেছে অজ্ঞাত চোর।

অজ্ঞান অবস্থায় নয়জনকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে কেউই এখনো স্বাভাবিক হতে পারেননি।

সোমবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আবু ইউছুফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ ব্যক্তিদের খোঁজ খবর নেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা পৌরসভার উত্তর বাজার এলাকায় মতিন ট্রেডার্সের তিন তলা ভবনের তৃতীয় তলায় থাকেন ব্যবসায়ী মো. আলমগীর ভূঁইয়া। গত সোমবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিবারের সবাই মিলে ভাত খান। ভাত খাওয়ার পর থেকে সবার মাথা ঘুরতে থাকে। আলমগীর ভূঁইয়া তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি মুঠোফোনে স্থানীয় কয়েকজনকে জানালে তাঁরা বাসায় আসেন।

পরে আলমগীর ভুঁইয়া (৪৫), তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার তৃশা (৩৫), মেয়ে সাদিয়া সুলতানা (১৫), ফারিয়া আক্তার (১২), তাবাসুম (৯) ও লামিয়া আক্তার (৭) ও ছেলে মুরসালিন ভুঁইয়াকে (৬) রাত তিনটার দিকে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের বেসরকারি হাসপাতাল বড়লেখা সিটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ঘর থেকে কিছু চুরি হয়নি।

অন্যদিকে একই ভবনের দ্বিতীয় তলায়ও একইভাবে সেই রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আবু মোহাম্মদ শহীদ সোরওয়ার্দী (৪০), তাঁর স্ত্রী নুশরাত জাহান লাবনী (৩৩), তাদের সন্তান মাহী আহমদ (১০) ও মেধা (৭) খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

অজ্ঞাত চোরেরা তাদের বাসা থেকে তিনটি মুঠোফোন, আড়াই ভরি সোনা ও নগদ ১০ হাজার টাকার মতো নিয়ে গেছে। আবু মোহাম্মদ শহীদ সোরওয়ার্দী ও তাঁর স্ত্রী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ছেলে মাহী ও মেয়ে মেধাকে মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সকালে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বড়লেখা সিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা কর্মকর্তা রিফাত চৌধুরী বলেন, ‘আমি ঘটনার রাতে তাদের বাসায় গিয়েছিলাম। তাদেরকে অচেতন অবস্থায় পেয়েছি। ধারণা করছি খাবারের সাথে চেতনানাশক কিছু মেশানো হয়েছে। নয়তো ঘরের মধ্যে চেতনানাশক কিছু স্প্রে করা হয়েছে। তাদের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।’

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ভিকটিমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ধারণা করা হচ্ছে চেতনানাশক কিছু খাদ্যের মধ্যে মিশিয়ে দিয়েছে। এটা অজ্ঞান পার্টির কাজ হবে। এখনো মামলা হয়নি। প্রস্তুতি চলছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত