০১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:৪৭
এশিয়া কাপ ক্রিকেট মাত্র শেষ হয়েছে। তার মধুর রেশ এখনো কাটেনি। আহ্ আরও যদি ২০টা রান হতো- রাস্তাঘাটে কান পাতলে এখনো শোনা যায় এই আফসোস। ক্রিকেটের এই রেশ থাকতে থাকতেই শুরু হচ্ছে ফুটবল উৎসব। আজ (সোমবার) সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে পর্দা উঠছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের। বাংলাদেশসহ মোট ৬টি দল অংশ নিচ্ছে এই টুর্নামেন্টে।
আজ সন্ধ্যায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম লাওসের খেলা দিয়ে পর্দা উঠবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের এবারের আসরের। এখানেই অনুষ্ঠিত হবে গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচ।
এরআগে দুইবার লাওসের মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ। তবে এখনো জয়ের দেখা মিলেনি। তবে এবার জয় চান বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে আর তারকা খেলোয়াড় জামাল ভ’ইয়া।
রোববার ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জেমি ডে বলেন, লাওস ভালো দল। আমাদের প্রস্তুতি ভালো। জয় দিয়েই তাই আমরা শুরু করতে চাই। একই প্রত্যাশা জামাল ভ’ইয়ারও। এশিয়ান গেমসের আগে এ টুর্ণামেন্টে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে চান তারা।
তবে ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত চুড়ান্ত হয়নি কার হাতে উঠছে বাংলাদেশের নেতৃত্ব। রোববার সংবাদ সম্মেলনে কোচ জানিয়েছেন- অধিনায়কত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা জামালেরই বেশি।
টুর্নামেন্টে ৬টি দল অংশগ্রহণ করলেও সবগুলো দল রোববার বিকেল পর্যন্ত সিলেট এসে পৌঁছেনি। রোববার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ৬দলকে নিয়ে টুর্নামেন্ট পূর্ব সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে এতে উপস্থিত ছিলো বাংলাদেশ, ফিলিস্তিন, লাউস ও ফিলিপাইন। তখনও সিলেট এসে পৌছেনি তাজাকিস্তান। আর নেপাল বাংলাদেশেই এসে পৌছেনি। ফিলিপাইন এলেও তাদের কোচসহ অনেক খেলোয়াড়ই এখনও কাতারে। দুএকদিনের মধ্যে তারা যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির ম্যানেজার জোসেফ মারিমা।
ক্রিকেট কিংবা ফুটবল- যেকোনো ধরণের খেলা হলেই সিলেটের মাঠে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ বনাম নেপাল অনুর্ধ-২৩ দলের ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাম লেখায় সিলেট জেলা স্টেডিয়াম। ফুটবলের দর্শক খড়ার ওই সময়েও সিলেট স্টেডিয়ামে ঢল নামে দর্শকদের। ধারণ ক্ষমতার চেয়েও অধিক দর্শক সমাগম হওয়ায় গ্যালারি উপচে মাঠের মধ্যে বসতে হয় কয়েক হাজার দর্শককে। সে সময় সিলেটের দর্শকদের ফুটবল উন্মাদনার পাশাপাশি আয়োজকদের অব্যবস্থাপনার বিষয়টিও আলোচিত হয়।
সিলেটে ফুটবলের এই উন্মাদনা দেখে ২০১৫ সালে প্রথম বঙ্গবন্ধু কাপের একটি সেমিফাইনালসহ চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। ৩ বছর পর আবার সিলেটে ফিরেছে বঙ্গবন্ধু কাপ।
এবারও প্রচুর সংখ্যক দর্শক সমাগম হবে জানিয়ে বাফুফের সদস্য ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন সেলিম বলেন, তবে এবার গ্যালারি উপচে মাঠে দর্শক প্রবেশের মতো ঘটনা ঘটবে না। কারণ গ্যালারির ধারণ ক্ষমতার বেশি টিকিট এবার বিক্রি হচ্ছে না। সিলেট স্টেডিয়ামে ২৫ হাজার দর্শকের আসন রয়েছে বলে জানান মাহিউদ্দিন। খেলার জন্য মাঠও পুরো প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি তার।
সবার আগে শুক্রবারই সিলেট এসেছিলো বাংলাদেশ টিম। শনিবার থেকেই অনুশীলনে নামে তারা। এদিন সিলেট আসে লাওস, ফিলিপাইন ও ফিলিস্তিন। আজ সকালে অনুশীলনে ঘাম ঝড়ায় জেমি ডে’র শিষ্যরা। আর বিকেলে বিকেএসপি মাঠে অনুশীলন করে লাউস।
রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব দলই চ্যাম্পিয়ান হওয়ার লক্ষ্যেও কথা জানিয়েছে। এশিয়ান গেমসের আগে প্রস্তুতি পর্ব হিসেবেও এই টুর্নামেন্টকে দেখছে সবগুলো দল। সেই প্রস্তুতিটা ভালো করে নিতে চায় সবাই। আর নিজেদের মাঠে নিজেদের দর্শকদের সামনে নিজেদের সেরাটা দিয়ে সাফ গেমসের দুঃখ ভুলতে চায় বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আজ সন্ধ্যা ৬টায় ছোট আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে উদ্বোধন হবে বঙ্গবন্ধু কাপের। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আপনার মন্তব্য