ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৯ নভেম্বর, ২০১৮ ১২:২৬

সেরা হয়েই ক্রিকেটের ইতি টানলেন রাজিন

গত ৩ নভেম্বর, নিজের শহর সিলেট থেকে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন এক সময়ের মাঠ কাঁপানো ব্যাটসম্যান রাজিন সালেহ। পাঁচদিন পর পাঁচশো কিলোমিটার দূরের শহর কক্সবাজারে ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন রাজিন সালেহ।

এদিকে নিজের শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেও রানের দেখা পেলেন জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটসম্যান রাজিন সালেহ। তার ৮৭ রানের ইনিংসেই ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ম্যাচ ড্র করেছে সিলেট বিভাগ। আর ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে এমন পারফরম্যান্স তাকে ম্যাচসেরার খেতাবও এনে দিয়েছে।  ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, সবার নজর ছিল ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা সিলেট অধিনায়ক রাজিনের দিকে। শেষটা ব্যাট হাতে রাঙিয়েই বিদায় নিলেন জাতীয় দলের একসময়ের নিয়মিত এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

সিলেটের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শেষ বারের মতো ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ইনিংসেই পেয়েছেন লড়াকু দুই ফিফটি। এতো কিছুর পরে শুধু একটাই আক্ষেপ থাকতে পারে, মাত্র ১৩ রানের জন্য শেষ দিনটা সেঞ্চুরি করে স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না। ২২৪ বল খেলে শুভাগত হোমের বলে বোল্ড হয়ে শতক হাতছাড়ার আক্ষেপে পুড়েছেন তিনি।

রাজিনের বিদায়ের দিনের শুরুতে নাইটওয়াচম্যান এনামুল হক জুনিয়রের (৫) উইকেট হারানোর পর জাকের আলীকে নিয়ে (৭৭*) রানের চাকা সচল রাখেন রাজিন। তবে দলীয় ১৮১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে রাজিনের বিদায়ে ৭২ রানের এই জুটি ভেঙে যায়। তবে শাহানুর রহমানকে নিয়ে (৭০*) দিন পার করে দেন জাকের। এরপর সিলেটের রান যখন ৩০০ ছাড়ায়, ম্যাচ ড্র ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা বিভাগের হয়ে ২ উইকেট করে পেয়েছেন শহাদাত হোসেন ও শুভাগত হোম। আর ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মোশাররফ হোসেন ও তাইবুর রহমান।

নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে গতকাল (৭ নভেম্বর) ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল সিলেট। ক্রিজে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক রাজিন সালেহ। আজ সেই রানকে বাড়িয়ে নিয়ে ফিফটি তুলে নেন তিনি। তবে সেখানেই থেমে যাননি, বরং ইনিংস টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে শুভাগত হোমের বলে বোল্ড হলে ইতি ঘটে ২৯৭ মিনিট ধৈর্য ধরে ২২৪ বলে ৭ চার আর ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৬৭ ও ৮৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন রাজিন সালেহ।

রাজিনের অবসরের মাধ্যমে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। দেশের অভিষেক টেস্টের স্কোয়াডে থাকা রাজিন বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার। ২০০০ সালে তার অভিষেক হয়। দেশের হয়ে তার অভিষেক হয় ২০০৩ সালে। ২০০৮ পর্যন্ত টানা খেলেছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ২৪ টেস্টে ৭ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ১১৪১ রান। ৪৩ ওয়ানডেতে তার সংগ্রহ এক সেঞ্চুরিতে ১০০৫ রান।

২০০৮ সালে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন নিয়মিত। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৪৮ ম্যাচ খেলে রাজিনের মোট রান ৮৪৮১, গড় ৩৬.০৮। সেঞ্চুরি আছে ১৮টি আর ফিফটি ৪৪টি। সর্বোচ্চ স্কোর ২০১*।

১৮ বছরের প্রথম শ্রেণি ক্যারিয়ার তার, এর চেয়ে বেশি সময় ধরে খেলছেন শুধু তুষার ইমরান ও মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণিতে রাজিনের চেয়ে বেশি রান আছে শুধু তুষার ইমরান ও অলক কাপালির।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত