ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০১:২৯

সিলেটে এসে স্বরূপে সাকিব-তামিম-সাব্বিররা

পরপর দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট তামিম ইকবাল। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই এমনটি হয়নি আগে। এবারের বিপিএলে এসে হলো সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো তামিমের। ঢাকা পর্বে ঢাকা ডায়নামাইটস সব ম্যাচে জিতলেও রানের দেখা পাচ্ছিলেন না দলনেতা সাকিব আল হাসান।

কেবল এই দুজনই-ই নয়, দেশীয় তারকাদের প্রায় সকলেই ঢাকা পর্বে ব্যাটিংয়ে ছিলেন মলিন। আর সিলেটে এসে প্রথম দুদিন তো পুরো বিপিএলই ভুগছিল রান খরায়। রান না পাওয়ায় সৌম্য, মমিনুলের তো একাদশেই ঠাঁই হচ্ছে না।

বিপিএল শেষেই নিউজিল্যান্ড সফর। এরপর বিশ্বকাপ মিশন। এমন গুরুত্বপূর্ণ সব সিরিজের আগেই ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট আসরেই মলিন দেশীয় তারকারা। ক্রিকেটকর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়ারই কথা।

এনিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা লোকাননি বোর্ড সভাপতিও। 'বিশ্বকাপের জন্য যাদের ভাবা হচ্ছে তারা পারফর্ম করতে পারছে না' জানিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা ভীষণ চিন্তিত।

একইসঙ্গে আশাবাদের কথাও শুনিয়েছিলেন তিনি। ‘এখনো বিপিএল শেষ হয়নি, আশা করি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ভালো কিছুই পাবো’- বলেছিলেন পাপন।

পাপনের এমন আশাবাদের দিনেই দীর্ঘ খরা কাটিয়ে রানে ফিরেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুই তারকা। সাকিব আর তামিম। সিলেটে এসে রান পেয়েছেন লিটন দাসও। আর শনিবার দুর্দান্ত এক ইনিংসের মাধ্যমে দীর্ঘ খরা কাটিয়ে প্রত্যাবর্তনের আভাস দিলেন সাব্বির রহমান। সন্ধ্যার ম্যাচে হেসেছে মাহমুদউল্লার ব্যাটও।

শনিবার সিলেট স্টেডিয়ামে রংপুরের বিপক্ষে ৫১ বলে ৮৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংসে সাব্বির জানিয়ে দিলেন বিশ্বকাপের জন্য হিসেবে রাখতে হবে তাকেও। অথচ এই সাব্বির এতদিন কোথায় যেন লুকিয়ে ছিলেন!

আর ব্যাডপ্যাচ কাটিয়ে শনিবার রাতে কুমিল্লার বিপক্ষে ২৬ বলে ৫০ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও এমন ইনিংসেও জেতাতে পারেননি দলকে। সিলেটে আগের ম্যাচেই ৭৫ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক এ ম্যাচে করেন ৫২ রান।

বিপিএল সিলেটে আসার পর থেকেই মূলত রানের ফিরতে শুরু করেছেন দেশীয় তারকারা। ব্যাডপ্যাচ কাটিয়ে স্বমহিমায় ফিরছেন তারা। তামিম আর সাকিবের কথা তো শুরুতেই বলা হয়েছে। শুক্রবার তামিমের ৭৩ আর সাকিবের ৬১ রানের ম্যাচ জয়ী দুটি ইনিংস মনে করিয়ে দিলো ক্রিকেটের পুরনো সেই বেদবাক্য- ফর্ম ইজ টেম্পোরারি বাট ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।

বুধবার রংপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচে রানে ফিরেছেন লিটন দাসও। আগের চার ম্যাচের ১,০, ৯ ও ৬ রানের লজ্জা শেষে বুধবার ৪৩ বলে ৭০ রানের ইনিংসে দেখা মিলে আগ্রাসী লিটনের। তবে দেশীয় তারকাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ধারাবাহিক জাতীয় দলে না থাকা জুনায়েদ সিদ্দিকী। ১৯১ রান তুলে বিপিএলের এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ রান শিকারির মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশি তিনিই।

কোচ স্টিভ রোডস বলে দিয়েছেন- এইসব বিপিএল-টিপিএল পরের সিরিজে কোনো কাজে আসবে না। তারউপর নিজের শিষ্যদের রান খরা নিশ্চয়ই আরও ভাবনায় ফেলেছিলো কোচকে।

আশার কথা, খরা কাটিয়ে রানে ফিরছেন দেশিয় তারকারা। এবার সৌম্য-ইমরুলদের চেনা-রূপে ফেরার অপেক্ষা!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত