স্পোর্টস ডেস্ক

১০ জুন, ২০১৯ ১৪:৫৩

ক্রিকেটকে বিদায় বললেন যুবরাজ সিং

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন ২০১১-র বিশ্বকাপের 'হিরো' যুবরাজ সিং৷ বিশ্বকাপ চলাকালীনই অবসর ঘোষণা দিলেন ভারতের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার৷

সোমবার মুম্বাইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে অবসরের কথা ঘোষণা করেন যুবরাজ৷

যুবরাজ বলেন, 'অসংখ্য ক্রিকেট ভক্তের ভালোবাসা পেয়েছি৷ পরিবারকে সব সময় পাশে পেয়েছি৷ ভারতের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছি৷ ন্যাটওয়েস্ট থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ, একাধিক ম্যাচ সারা জীবন আমার মনে থাকবে৷ মনে থাকবে ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়৷'

ক্যান্সার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন আমি আর ফিরতে পারব না৷ কিন্তু চিকিৎসক ও পরিবার সব সময় পাশে থেকেছেন আমার৷ আমি ফিরতে পেরেছি৷ তাই এ বার সমাজের ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য কিছু কাজ করতে চাই৷'

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বিসিসিআই-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ভাবছিলেন যুবরাজ৷ অবসর নিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকেও৷ বিসিসিআই-এর এক কর্তার কথায়, 'উনি (যুবরাজ সিং) জিটি২০ (কানাডা), ইউরো টি২০, হল্যান্ডে বা আয়ারল্যান্ডে ফ্রিল্যান্স কেরিয়ার নিয়ে বিস্তারিত বিসিসিআই-কে জানাতে পারেন৷' কারণ আইসিসি অনুমোদিত ফরেন টি২০ লিগে খেললে, বিসিসিআই-এর অনুমতি নিতে হয়৷

সম্প্রতি ইরফান পাঠান বিসিসিআই-এর অনুমতি না-নিয়েই ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে নাম নথিভুক্ত করেন৷ এরপরই ইরফানকে নাম তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় বিসিসিআই৷ এ ক্ষেত্রে বিসিসিআই-এর ওই কর্তার বক্তব্য, 'যুবরাজও বিদেশি টি২০ লিগে খেলতে পারবেন কিনা, তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে৷ এমনকি যদি তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নেন, তা হলেও টি২০ প্লেয়ার হিসেবে বিসিসিআই-এ রেজিস্টার্ড প্লেয়ার৷ আইনটি খতিয়ে দেখা হবে৷'

যুবরাজ সিং শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১২ সালে৷ চলতি বছরের আইপিএল-এও প্রায় অবিক্রীত ছিলেন যুবি৷ পরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে কেনে একেবারে বেস প্রাইসে৷ ৪টি ম্যাচ খেলেন৷ একটি হাফ সেঞ্চুরি-সহ ৯৮ রান করেন তিনি আইপিএল-এ।

ভারতের হয়ে দুই দশক ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ব্যাট হাতি প্রতিপক্ষের বোলরদের ওপর ছড়ি চালিয়েছেন। ভারতে ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে জয়ে রেখেছেন বড় অবদান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় বলে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে ঢুকে গেছেন।

ভারতের হয়ে ২০০০ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় যুবরাজের। ভারতের জার্সিতে ৪০ টেস্ট খেলেছেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার। ওয়ানডে খেলেছেন ৩০৪টি। এছাড়া টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন ৫৮টি। টি-২০ ক্রিকেটে তার স্ট্রাইক রেট ১৩৬.৩৮।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে যুবরাজ ২৩৮ রান করেন। ওই বছরই জাতীয় দলে ডাক পান। নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৮০ বলে ৮৪ রান করেন। তরুণ যুবরাজ নেটওয়েস্ট সিরিজের লর্ডসে ইংল্যান্ডের ৩২৭ রান তাড়া করতে নেমে টপ অর্ডারের ধসের পর ৬৩ বলে ৬৯ রান করেন। ভারতের হিরো বনে যান।

২০১১ বিশ্বকাপে তিনি চার ফিফটি এবং এক সেঞ্চুরিতে ৩৬২ রান করেন। পার্ট টাইম বোলিংয়ে নেন ১৫ উইকেট। কিন্তু বিশ্বকাপের পরে তার 'স্টোমাক ক্যান্সার' ধরা পড়ে। ক্যান্সার জয় করে আবার ২০১৩ সালে ক্রিকেটে ফেরেন যুবরাজ। দারুণ সেঞ্চুরিও করেন ফেরার পর। কিন্তু শুরুর সেই যুবরাজকে আর পাওয়া যায়নি। এরপরও ক্রিকেট যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন যুবি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিনি ৫২ ফিফটি এবং ১৪ সেঞ্চুরিতে ৩৬.৫৬ গড়ে ৮৭০১ রান করেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত