স্পোর্টস ডেস্ক

১৩ জুন, ২০১৯ ০২:১৫

ইমরান-আকরামরাও যা পারেননি, তাই করলেন আমির!

বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে পাকিস্তান। দলের এই হারের দিনে সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন মোহাম্মদ আমির। ক্যারিয়ার সেরা বল করে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন।

ব্যক্তিগত সেরা সাফল্যের দিনে আরো একটি কীর্তি গড়েছেন আমির। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়ছেন।  অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইমরান খানের মতো বোলাররা যা পারেননি, সেটাই করে দেখালেন এই তারকা।

অথচ বিশ্বকাপ দলে আমিরের জায়গা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা ছিল। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন তাঁর বিশ্বকাপ খেলাটা হয়তো ভাগ্যে লেখা নেই। একেবারে শেষ মুহূর্তে পরিবর্তিত বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছিলেন আলোচিত এই পেসার।

বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়ে আমির বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য। প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে লজ্জাজনক হারের দিনে এই অভিজ্ঞ পেসার একাই উজ্জ্বল ছিলেন। ছয় ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি।

ফেভারিট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও সে ধারাবাহিকতা রেখেছেন। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। নিয়েছেন দুই উইকেট।

বুধবার সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছেন আমির। দুর্দান্ত অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানরা যখন রানের পহাড়ে ছুটছিলেন তখন লগাম টেনে ধরেন এই আলোচিত পেসার। শুরুতে দারুণ ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ চার শতাধিক হবে এমনটা অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা সেভাবে খেলছিলেনও। কিন্তু আমিরের বোলিং তোপে অসিদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

শেষ দিকে আমিরের তোপে শুধু লক্ষ্যটাই কমেনি, নিজের সামর্থ্যের প্রমাণটাও ভালোভাবে দিয়েছেন। ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে দারুণ উজ্জ্বলতা ছড়ান এই বাঁহাতি পেসার।

ওয়ানডেতে এর আগে আমিরের সেরা বোলিং ছিল ২০০৯ সলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। কলম্বোতে সে ম্যাচে নয় ওভার বল করে ২৮ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন। এদিন ১০ ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে পান পাঁচ উইকেট। শুধু তাই নয়, চলমান বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে রয়েছেন তিনি। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে হয়তো আরো বড় সাফল্য পাবেন তিনি।        

অবশ্য দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছেন আমির। কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামের পর পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিভাবান পেসারও বলা হয় তাঁকে। তবে ২০১০ সালে মারাত্মক ভুলে পথ হারান এই বাঁহাতি পেসার। স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পাঁচ বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। মিস করেন ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপ।

নিষেধাজ্ঞা শেষে ২০১৬ সালে অনেকটাই সেই পুরোনো ঝলক নিয়ে ফিরলেও সাম্প্রতিক সময় চরম ফর্মখরায় ভুগছিলেন এই পেসার। তাই প্রথমে তাঁকে বিশ্বকাপের দলে রাখা হয়নি। অনেক আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারে প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে এসে আলো ছড়িয়ে চলছেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত